আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কোকা-কোলার নাম যুক্তরাজ্যের সৈকতগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আবর্জনার গায়ে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। শুধু তা-ই নয়, দেশটির উপকূলজুড়ে দূষণকারী ব্র্যান্ডেড প্যাকেজিং বর্জ্যের মধ্যে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ (৬৫ শতাংশ) আসে মাত্র ১২টি প্রতিষ্ঠান থেকে।
সম্প্রতি সমুদ্ররক্ষা বিষয়ক দাতব্য সংগঠন সার্ফার্স এগেইনস্ট স্যুয়েজের (এসএএস) এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ১১ হাজার ১৩৯ মাইল দীর্ঘ সৈকতজুড়ে দেশটির বৃহত্তম সমন্বিত পরিষ্কার কর্মসূচিতে অংশ নেন ৩ হাজার ৯১৩ জন স্বেচ্ছাসেবক। ওই কর্মসূচি থেকে ৯ হাজার ৯৯৮টি ব্র্যান্ডের প্যাকেজিং বর্জ্য পাওয়া যায়, যেগুলো তৈরি করেছে ৩২৮টি প্রতিষ্ঠান।
যুক্তরাজ্যের সৈকত দূষণে অভিযুক্ত এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে কোকা-কোলা, পেপসিকো, এবি ইনবেভ, ম্যাকডোনাল্ডস, মন্ডেলেজ ইন্টারন্যাশনাল, হেইনেকিন, টেসকো, কার্লসবার্গ গ্রুপ, সান্টোরি, হারিবো, মার্স, অ্যাল্ডি প্রভৃতি।
এসএএসের প্রধান নির্বাহী হুগো ট্যাঘম বলেন, আমাদের বাৎসরিক ব্র্যান্ড অডিট আরও একবার প্রকাশ করল, প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং দূষণের বিস্ময়কর পরিমাণ আসছে সরাসরি বেশ কিছু বড় প্রতিষ্ঠান এবং তাদের বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলো থেকে।
সরকারকে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে এবং সমুদ্রে প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং দূষণ বন্ধ করতে ‘অল-ইন’ ডিপোজিট স্কিমের মতো আইন জরুরি ভিত্তিতে প্রবর্তন করতে হবে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দাবি, যুক্তরাজ্যে একটি ভালো ডিপোজিট রিটার্ন স্কিম (ডিআরএস) না থাকার কারণেই অপ্রয়োজনীয় দূষণ বন্ধ হচ্ছে না। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের এ ধরনের স্কিম চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, তবে ২০২৪ সালের আগে তা সম্ভব নয়। এর জন্য করোনাভাইরাস মহামারিকে দায়ী করা হচ্ছে।
ডিআরএস হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে ভোক্তা একবার ব্যবহারযোগ্য কন্টেইনারের কোনো পণ্য কিনলে তাকে বাড়তি অর্থ দিতে হবে। এটি মূলত এক ধরনের আমানত, যা খালি কন্টেইনার কোনো রিটার্ন পয়েন্টে জমা দিলেই ভোক্তাকে ফেরত দেয়া হবে।
কোকা-কোলার এক মুখপাত্র বলেন, অন্য সবার মতো আমরাও প্যাকেজিং বর্জ্য কমাতে আগ্রহী। আমরা চাই না, আমাদের প্যাকেজিং বর্জ্য এমন কোনো জায়গায় পড়ে থাক, যেখানে তার থাকার কথা নয়। আমাদের সব প্যাকেজিংই শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং আমাদের লক্ষ্য এটি আরও বেশি পরিমাণে ফিরে পাওয়া, যাতে সেগুলো পুনর্ব্যবহার করা যায় ও আবার নতুন প্যাকেজিংয়ে পরিণত হয়।
তিনি বলেন, কোনো প্যাকেজিং পড়ে থাকতে দেখা সত্যিই হতাশাজনক, আর এজন্যই আমরা একটি সুপরিকল্পিত ডিপোজিট রিটার্ন স্কিম সমর্থন করি। এটি মানুষকে বর্জ্য ফেলে দেয়ার বদলে পুনর্ব্যবহারে উৎসাহিত করবে।
সাননিউজ/এএসএম