আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
হংকংয়ের দুটি কুকুর থেকে প্রথমবারের মতো মিললো করোনা ভাইরাস। এ ক্ষেত্রে গবেষকেরা ধারণা করছেন, কুকুর দুটির মালিকের কাছ থেকে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।
গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে নেচার সাময়িকীতে।
গবেষকেরা ভাইরাসের জিনগত বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, হংকংয়ের ওই পরিবারের সংক্রমিত সদস্যদের সঙ্গে কুকুরের সংক্রমণের সাদৃশ্য রয়েছে। সরাসরি জিনগত এ সম্পর্ক প্রমাণ করে যে মালিকের কাছ থেকেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকী নেচার এক প্রতিবেদনে বলেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর দুটি অসুস্থ হয়নি। কুকুর পরস্পরকে সংক্রমিত করেছে বা কুকুরের কাছ থেকে মানুষ সংক্রমিত হয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট মালিক পেইরিস বলেন, গবেষকরা সন্দেহ করেছিলেন যে সংক্রমণটি মালিকদের কাছ থেকে কুকুরের কাছে চলে গেছে এবং সরাসরি জিনোমিক লিংক পাওয়ার বিষয়টি সে ধারণাকে দৃঢ় সমর্থন করে।
গবেষক পেইরিস বলেন, গবেষণায় কোনো প্রমাণ দেখা যায়নি যে কুকুর থেকে কুকুরে বা মানুষে সংক্রমিত হতে পারে। তবে ভাইরাসটির গতিপথ কোন দিকে, তা নিশ্চিত হওয়া অসম্ভব। তাই আমাদের সব দিক বিবেচনায় রাখতে হবে।
নেদারল্যান্ডসের উট্রেচ্ট ইউনিভার্সিটির ভেটেরিনারি এপিডেমিওলজিস্ট আরজান স্টেজম্যান বলেছেন, যদিও বিশ্লেষণে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে কোভিড-১৯ আক্রান্তরা কুকুরকে সংক্রমিত করতে পারে, তবে এই ঘটনার আশঙ্কা কম। গবেষণায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকা ১৫টি কুকুরের মধ্যে মাত্র ২টির ক্ষেত্রে সংক্রমণ ধরা পড়ে।
তবে অন্য বিজ্ঞানীরা বলছেন যে পোষা প্রাণীদের একে অপরের মধ্যে এবং মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় ভবিষ্যতের প্রকোপগুলো পরিচালনার অংশ হিসেবে সঠিকভাবে তদন্ত করা দরকার।
এবার দুটি কুকুর আক্রান্ত হওয়ার আগে অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এর আগে হংকংয়ে একটি ও নিউইয়র্কে দুটি বিড়াল, নিউইয়র্ক সিটির ব্রোনক্স জুর চারটি বাঘ ও তিনটি সিংহ সংক্রমিত হয়েছিল।
এর আগে গত এপ্রিল মাসে চীনা গবেষকেরা করোনাভাইরাসে কুকুর সংক্রমিত হতে পারে বলে সতর্ক করেছিলেন। হংকংয়ের এ ঘটনায় ওই সতর্কবার্তা ফলে গেল।
জার্মানির রিমসের ফেডারেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর অ্যানিমেল হেলথের প্রধান টমাস মেটেন্লিটার, বলেন, করোনা আক্রান্ত কুকুরের মালিকদের পোষা প্রাণী প্রতিপালনে সতর্ক হওয়া উচিত।
আমেরিকান ভেটেরিনারি মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সুপারিশ করে যে যাদের কোভিড-১৯ আছে, তাদের পোষা প্রাণীর যত্ন নেওয়ার সময় মাস্ক পরতে হবে। অসুস্থ ব্যক্তিদেরও জন্তুদের যত্ন নেওয়া, আলিঙ্গন বা ঘনিষ্ঠতা এড়ানো উচিত এবং পশু নাড়াচাড়ার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নেওয়া উচিত।
সান নিউজ/ আরএইচ