আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে একের পর এক অঞ্চল দখল করছেন তালেবানরা। এতে করে বুশের আরামের ঘুম হারাম হচ্ছে। বিশ্বের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়ছে। আফগানে হামলা চালিয়ে তালেবান উৎখাত করা আমেরিকান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট স্বয়ং জর্জ ডব্লিউ বুশ এখন রাগে ফুঁসছেন রাতের আঁধারে আমেরিকানদের আফগান ছাড়ার কারণে। অবশ্য ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন তালেবানদের সাথে তারা কাজ করবেন।
আফগান থেকে আমেরিকান সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারে বুশ বলেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশটির নিরীহ মানুষকে কট্টরপন্থি তালেবান গোষ্ঠীর ‘হত্যাকাণ্ডের’ মুখে পড়বে। আফগানিস্তানে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল তালেবান সরকার। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সদস্যরা চারটি বিমান ছিনতাই করে নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে আত্মঘাতী হামলা করেন। এই হামলার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০১ সালে আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু করেন। যুক্তরাষ্ট্র আফগান মিলিশিয়াদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাবুল থেকে তালেবান সরকারকে বিতাড়িত করে।
প্রায় ২০ বছর ধরে চলা আফগান যুদ্ধের ইতি টানছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের আগে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সব সেনা প্রত্যাহার করবে। এ লক্ষ্যে প্রায় সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিদেশি সেনা চলে যাওয়ার মুখে সম্প্রতি আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালাচ্ছে তালেবান। গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত-ক্রসিংগুলো তারা নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে। জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ভুল। দেশটির নারী ও শিশুরা অবর্ণনীয় কষ্টের মুখে পড়তে যাচ্ছে। তাদেরকে নিষ্ঠুর গোষ্ঠীর (তালেবান) শিকার হওয়ার জন্য ছেড়ে দেয়া হলো। এ সিদ্ধান্ত আমার মন ভেঙে দিচ্ছে।
গতকাল জেনেভায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) মুখপাত্র বাবর বেলুচ বলেন, আরেকটি মানবিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে আফগানিস্তান। আফগানিস্তানে একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে দেশটির ভেতরে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে আরও বাস্তুচ্যুতি হতে পারে।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার ধারণা অনুযায়ী, গত জানুয়ারি মাস থেকে দেশটিতে ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ নতুন করে বাস্তুহারা হয়েছে। এতে দেশটির মতো ৩৫ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
সান নিউজ/এফএআর