আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: নির্জন একটি দ্বীপ। সেই দ্বীপে ১৩ বছরের এক মেয়ে শিশুকে খুঁজে পায় জেলেরা।
পরে জানা যায়, কথা না শোনায় মেয়েকে শিক্ষা দিতেই ওই দ্বীপে তাকে নিয়ে গেছে বাবা-মা। আর তাদের মনোযোগ অন্যদিকে থাকার সুযোগে জেলেদের উদ্দেশে বিপদ সংকেত পাঠায় মেয়েটি। এই ঘটনায় সম্প্রতি আলোড়িত হয়ে উঠেছে চীনের মিডিয়ায়।
সম্প্রতি চীনের শানডং প্রদেশের ওয়েইহাই শহরের পুলিশকে মেয়েটির খবর দেয় স্থানীয় জেলেরা। ছোট একটি নির্জন দ্বীপে মেয়েটিকে দেখতে পাওয়ার কথা জানায় তারা। মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের ওই দ্বীপটিতে থাকা মেয়েটি জেলেদের জানায়, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাবা-মা তাকে এখানে রেখেছে। উপকূলে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানায় মেয়েটি।
পরে পুলিশ ওই দ্বীপে পৌঁছানোর পর মেয়েটি ও তার বাবা-মা খুঁজে পায়। পুলিশকে জানানো হয়, মেয়েকে কঠিন পরিস্থিতিতে টিকে থাকার কৌশল শেখাতেই নিয়ে গেছেন তারা।
মেয়েটির বাবা-মায়ের দাবি, তাদের মেয়ে কথা শোনে না। স্কুল থেকেও ছিটকে পড়েছে সে। খাবার সময় ছাড়া নিজের ঘরের বাইরে বের হতে চায় না। তাদের মনে হতে থাকে মেয়েটি তার সম্ভাবনা নষ্ট করছে। অনেক চেষ্টা করেও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি ঘটাতে না পেরে তারা তাকে নির্জন দ্বীপে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
একজন সারভাইবাল বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনার পর তাকে নিয়েই মেয়েকে নিয়ে ওই নির্জন দ্বীপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বাবা-মা। এর মাধ্যমে মেয়ের সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তুলতে কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলতে চেয়েছেন তারা। তবে সেখানে যাওয়ার পরও টিকে থাকায় মনোযোগ দেওয়ার বদলে বাবা-মায়ের মনোযোগ অন্যদিকে থাকার সুযোগে জেলেদের কাছে সাহায্য চায় ১৩ বছরের মেয়েটি।
মেয়েটি জেলেদের বলেন, ‘এখানে দাঁড়াতে পারছি না। তারা এই নির্জন দ্বীপে আমাকে টিকে থাকতে বাধ্য করছে। আমাদের কাছে কেবল পানি ও বিস্কুট আছে। তারা আগুনও জ্বালাতে পারেনি। আপনারা আমাকে উপকূলে নিয়ে যাবেন?’
পুলিশ পৌঁছানোর পর প্রাথমিকভাবে বাবা-মা মেয়েকে নিয়ে উপকূলে ফিরতে অস্বীকৃতি জানান। তাদের দাবি প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নিয়ে গেছেন তারা। সঙ্গে রয়েছে একজন সারভাইবাল বিশেষজ্ঞও।
ফলে মেয়েকে শিক্ষা দেওয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে চান তারা। বাবার দাবি, তার মেয়ে ইতোমধ্যেই জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার মতো উন্নতি করতে পেরেছে, অথচ এক সময় সে কোনও কথাই বলতে চাইতো না।
তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে মেয়েকে নিয়ে নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে হয়েছে ওই বাবা-মাকে।
সাননিউজ/এএসএম