আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ কাজ হারাচ্ছে। যার ফলে বেকার হয়ে পড়ছে অনেকেই। পয়সা না থাকায় জীবিকা চালাতে নিচ্ছে ভিন্নরকম পন্থা। এবার ভারতের তামিলনাড়ুর থিরুথানি জেলার আগুর গ্রামে লাঙ্গল কেনার পয়সা না থাকায় ছেলের সাইকেল দিয়েই লাঙ্গল বানিয়ে জমি চাষে নামলেন হতদরিদ্র এক কৃষক বাবা।
জানা যায়, সরকার থেকে পাওয়া মেধাবী ছেলের জন্য তিনি এ সাইকেলটি পেয়েছিলেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সেই সাইকেলই যেন প্রধান সম্বল হয়ে উঠেছে। লাঙ্গল কেনার পয়সা নেই তবে চাষাবাদ না করলে পরিবারের পেট চালানো দায়। তাই উপায় না পেয়ে ছেলের সেই সাইকেল দিয়েই লাঙ্গল বানিয়ে জমি চাষে নামলেন তিনি।
তিনি বলেন, করোনা আবহের মধ্যেও পেটের দায়ে চাষাবাদ চালিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। ঋণ নিয়ে কয়েক মাস চালাতে পারলেও, লকডাউনে ঘরে সমস্ত সদস্যরা বন্দি থাকায় সেই টাকাও ফুরিয়ে আসে। ফলে রোজগারের জন্য চাষাবাদ শুরু করতে বাধ্য হন নাগরাজ।
বাবার দেওয়ার জমিটুকুই একমাত্র সম্বল নাগরাজের। বরাবরই ফুলের চাষ করেন তিনি। সেই ফুল, যা দিয়ে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দেওয়া হয়। কিন্তু লকডাউনের কারণে মন্দির বন্ধ থাকায় রোজগারের পথ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। করোনা বিধিনিষেধ খানিকটা শিথিল হওয়ায় তাই ফের জমিতে নেমে পড়েছেন নাগরাজ।
ছেলের সাইকেলকে লাঙ্গল বানিয়ে নাগরাজ চাষ করছেন। সংবাদমাধ্যমের কাছে জানালেন, স্কুলে যাওয়ার জন্য এই সাইকেলটা ব্যবহার করত তার একমাত্র ছেলে। কিন্তু করোনা আবহে অনলাইনে পড়াশোনা করতে হচ্ছে বলেই স্কুলে যেতে হচ্ছে না তাকে। তাই সাইকেল কাজে লাগিয়েছেন নাগরাজ।
অনলাইন ক্লাস সেরে দুপুরে খাবার দিতে আসার পর চাষের কাজে বাবাকে সাহায্য করে নাগরাজের একমাত্র ছেলেও। সাইকেল চাষাবাদের কাজে ব্যবহার করায় কোনো দুঃখ নেই তার। বরং ছোট বয়সেই পরিবারের পাশে থাকতে পেরে সে খুশি।
নাগরাজ জানান, লকডাউনের কারণে আগুর গ্রামের ৮০০ কৃষক পরিবার তাদের মতোই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। এই গ্রামের প্রতিটা কৃষক ছোট ছোট জমিতে চাষ করে যা পান, তাতেই কোনো মতে পেট চলে পরিবারের।
লকডাউন তাদের চরম দুর্দশায় ঠেলে দিয়েছে। কেন্দ্রের তরফে সাহায্যের হাত বাড়ালে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারবেন তারা। এই আবেদনই জানিয়েছেন সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে।
সূত্র: নিউজ ১৮ বাংলা।
সাননিউজ/এএসএম