আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কামচাটকায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ২৮ জনের মধ্যে মোট ১৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার কামচাটকার উপকূলীয় শহর পালানার কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিল এএন২৬ নামের যাত্রীবাহী বিমানটি। খবর এএফপির।
উদ্ধারকারী দলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ৬ ক্রু এবং ২২ যাত্রীসহ কামচাটকার পেট্রোপাভলোভস্ক-কামচাটস্কি শহর থেকে উপকূলীয় শহর পালানার দিকে রওনা দিয়েছিল বিমানটি। পালানার কাছাকাছি আসার পর একটি পর্বতের চুড়ার সঙ্গে সংঘর্ষে সেটি ধ্বংস হয়।
রাশিয়ার বিস্তৃত উপদ্বীপ কামচাটকা দেশটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকাসমূহের মধ্যে একটি। বিশাল বনাঞ্চল, জীবন্ত আগ্নেয়গিরি ও কালো বালির সমুদ্র সৈকতের টানে প্রতি বছরই রাশিয়া ও বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে এই উপদ্বীপটিতে জড়ো হন মানুষজন। মঙ্গলবার বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির যাত্রীরাও পর্যটনের উদ্দেশেই কামচাটকা যাচ্ছিলেন।
বিমানটি ধ্বংসের তিনটি সম্ভাব্য কারণ নির্দিষ্ট করেছেন এ ঘটনায় প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্তকারী দলের সদস্যরা। তারা বলেছেন- দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, যান্ত্রিক ত্রুটি কিংবা পাইলটের অদক্ষতা- এই তিনটির যে কোনো এক বা একাধিক কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
তবে কামচাটকার বেসামরিক বিমান পরিবহন সংক্রান্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটির ফিটনেস সনদ ইতিবাচক ছিল।
উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার যে চিত্র দেখা গেছে, তাতে ওই বিমানটির কোনো যাত্রী বা ক্রু-এর জীবিত থাকার আশা নেই।
কামচাটকার গভর্নর ভ্লাদিমির সোলোদভ এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন রুবল (৪৭ হাজার ডলার) দেয়ার প্রতিশ্রুতিসহ প্রদেশজুড়ে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও সোলোদভকে এক টেলিগ্রামবার্তায় এ দুর্ঘটনার জন্য শোক ও সান্ত্বনা জানিয়েছেন।
রাশিয়ার এএন২৬ বিমানগুলো তৈরি করা হয়েছিল সাবেক সোভিয়েত আমলে, ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে। সম্প্রতি যে বিমানটি দুর্ঘটনাকবলিত হয়েছে সেটি প্রস্তুত করা হয়েছিল ১৯৮২ সালে।
এখনও সামরিক ও বেসামরিক কাজে রাশিয়ায় ব্যবহৃত হচ্ছে এসব বিমান। রাশিয়ার বিমান পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত অনেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্প্রতি দেশটিতে বিমান দুর্ঘটনা বেড়ে গেছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এই এএন২৬ বিমানসমূহ।
সাননিউজ/এমএইচ