আন্তর্জাতিক ডেস্ক: একেই বলে ভাগ্যের খেলা। নদীর একূল ভাঙে ওকূল গড়ে কথার মতো অবস্থা। ভাগ্য কখন কোথায় গিয়ে মানুষকে দাঁড় করায় তা বলা যায় না। এমনই একটি বিষয় হয়েছে ঈশ্বর সিংহ বদগাহর জীবনে। তিনি এক সময় যে কলেজে মালির ও চৌকিদারের কাজ করতেন, বর্তমানে সেই কলেজেরই অধ্যক্ষ হয়েছেন তিনি।
ভারতের ছত্তীশগড়ের এই সংগ্রামী মানুষের জীবনের গল্প নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
ছত্তীসগঢ়ের বৈটলপুরের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম ঈশ্বর সিংহের। গ্রামের স্কুলেই পড়াশোনা করেছেন। পরিবারে আর্থিক অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। ফলে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পরই সংসারের জোয়াল কাঁধে তুলে নিতে হয় তাকে।
এক সময় চাকরির সন্ধানে ঈশ্বর সিংহ বৈটলপুর থেকে পাড়ি দেন ভিলাই শহরে। সেখানে প্রথমে একটি কাপড়ের দোকানে মাসিক ১৫০ টাকা বেতনে কাজ নেন তিনি।
কাজ করলেও পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার অদম্য ইচ্ছা ছিল। সেই ভাবনা থেকেই শহরের কল্যাণ কলেজে ভর্তি হন ঈশ্বর।
কলেজে ভর্তি হওয়ার বেশ কয়েক দিন পর কলেজেরই বাগানে মালির কাজ নেন ঈশ্বর সিংহ। কিছু দিন মালির কাজ করার পর কলেজে চৌকিদারের কাজও পেয়ে যান।
কলেজের নির্মাণকাজে সুপারভাইজারের কাজেও সহায়তা করতে শুরু করেন তিনি। নির্মাণকাজে তার দক্ষতা দেখে কলেজ কর্তৃপক্ষ খুশি হয়ে তাকে কলেজের সব নির্মাণকাজের সুপারভাইজারের দায়িত্ব দেয়।
এর মধ্যেই ১৯৮৯ সালে স্নাতক পাস করেন ঈশ্বর সিংহ। তাকে কলেজে স্থাপত্যের শিক্ষকতার জন্য আংশিক সময়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।
পাশাপাশি তিনি এমএড, বিপিএড এবং এমফিল-ও করেন। এর পর তাকে সহকারী অধ্যাপকের পদে নিয়োগ দেয়া হয়। যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতাই তার অধ্যক্ষ হওয়ার পথ মসৃণ করে দেয় ধীরে ধীরে।
১৯৮৯ সালে কলেজের মালির কাজ শুরু করা ঈশ্বর ২০০৫ সালে সেই কলেজেরই অধ্যক্ষ হন।
ঈশ্বর বলেছেন, এক জন মালি থেকে অধ্যক্ষ হওয়ার পথটা মোটেই সহজ ছিল না। এর পেছনে নিজের যেমন অদম্য ইচ্ছা ছিল, তেমনই কলেজের প্রত্যেক শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা এই পথকে একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
সান নিউজ/এফএআর