আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মহামারি করোনাভাইরাসে কেউ ভাই, কেউ বোন, কেউ মা-বাবাকে হারিয়েছেন। কেউ আবার পরিবারের সবাইকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তবে সবচেয়ে ভয়ানক পরিস্থিতি হয়েছে সেসব শিশুর, যারা মা-বাবা দুইজনকেই হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়েছে।
ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে। এতে দেশটিতে এই ধরনের শিশুর সংখ্যা কম নয়।
তাদের কথা ভেবে এগিয়ে এসেছেন জয় শর্মা নামে এক ভারতীয় যুবক। এমন অন্তত ১০০ শিশুকে দত্তক নেয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। ২৬ বছর বয়সী জয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রয়েছে। তিনি দেশটির দেহরাদূনের পাহাড়ি রাস্তায় বড় হয়েছেন।
ছোট থেকেই মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছিল জয়ের মধ্যে। কেউ বিপদে পড়লে জয় সেখানে ছুটে যেতেন। বড় হয়েও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। পড়াশোনা শেষে তাই নিজেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালু করেন।
মহামারির শুরু থেকেই জয় দেহরাদূনের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যখনই প্রয়োজন পড়েছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। এছাড়া নিজ খরচে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ওষুধ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি চোখের সামনে ঘটা কতগুলো ঘটনা ব্যথিত করে তুলেছিল তার হৃদয়কে। দেহরাদূনে পরপর পাঁচ শিশুকে অনাথ হতে দেখেন জয়। মা-বাবাকে হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছিল সেই সব পরিবারের সন্তানদের। আর নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেননি তিনি। ঠিক করে ফেলেন তাদের ভরণপোষণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেবেন তিনি।
কিন্তু শুধু এই পাঁচ পরিবারই তো নয়, দেশে এমন আরও অনেক শিশুই মা-বাবাকে হারিয়ে অনাথ হয়েছে। তাদের কথা না ভাবলে কী চলবে? জয়ের সংস্থা তাই এমন অন্তত ১০০ শিশুকে দত্তক নেয়ার মনস্থির করেছে। ইতোমধ্যে ২০ জনকে দত্তক নিয়েছে সংস্থাটি। তাদের খাওয়া-দাওয়া, জামাকাপড়, পড়াশোনা, ওষুধসহ যাবতীয় ভার বহন করছেন জয়।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে জয় জানান, আগামী সপ্তাহের মধ্যে এই সংখ্যাটা ৫০ এ নিয়ে যাবেন তারা। তারপর ধীরে ধীরে ১০০ জনকে দত্তক নেবেন।
এখন পর্যন্ত জয় যে ২০ জনকে দত্তক নিয়েছেন তাদের বেশিরভাগেরই বয়স চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। আবার ১২-১৩ বছরের বাচ্চাও রয়েছে তাদের মধ্যে। যত দিন পর্যন্ত তারা সাবালক হচ্ছে এভাবেই তাদের সমস্ত দায়িত্ব সামলাবেন জয়।
সূত্র: আনন্দবাজার
সাননিউজ/এমএইচ