আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যারা ভ্যাকসিন নেননি তারা নিজেদের চেয়ে অন্যের জন্য ভয়ঙ্কর এবং ‘ভ্যারিয়েন্টের কারখানা’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরেই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের সৃষ্টি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের অধ্যাপক ডা. উইলিয়াম শ্যাফনার বলেছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের একমাত্র উৎস। ভ্যাকসিন না নেওয়া মানুষের সংখ্যা যত বেশি হবে, ভাইরাসের রূপ বদলে ফেলার সুযোগ তত বেশি সৃষ্টি হবে। যখন ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি ঘটবে তখন এটি আরও রূপান্তরিত হবে। আর এই রূপান্তরিত নতুন ধরন আগের প্রজাতির তুলনায় আরও বেশি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব ধরনের ভাইরাসের রূপান্তর ঘটে এবং করোনাভাইরাসই শুধুমাত্র রূপান্তর ঘটানোর মতো ভাইরাস নয়; বরং অন্যান্য ভাইরাসেরও রূপান্তর ঘটে। এছাড়া করোনাভাইরাস বদলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে আবারও পাল্টে যেতে পারে।
তবে ভাইরাসের বেশিরভাগ পরিবর্তনে ভয়ের তেমন কিছু নেই। পরিবর্তিত কিছু ভাইরাস দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু কিছু সময় যখন বিক্ষিপ্তভাবে ভাইরাসের রূপান্তর ঘটে, তখন এটি আরও বেশি সংক্রামক এমনকি অত্যধিক প্রতিলিপি তৈরি অথবা হোস্টকে গুরুতরভাবে সংক্রমিত করার সুযোগ পায়।
এ ধরনের সুযোগ পাওয়া ভাইরাসগুলো সংক্রমণের বিচারে অন্যান্য ভাইরাসকে ছাড়িয়ে যায় এবং কাউকে আক্রান্ত করার মতো অত্যধিক ভাইরাস কণাও তৈরি করে ফেলে। পরে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি অন্য কারও দেহে এই রূপান্তরিত ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে দেন, তাহলে তার শরীরেও রূপান্তরিত সংস্করণও চলে যায়।
এই পথে যদি রূপান্তরিত ধরনটি অন্যের শরীর সংক্রমণ ঘটাতে সফল হয়, তাহলে সেটি ভ্যারিয়েন্ট হয়ে ওঠে। কিন্তু তাকে ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি করতে হয়। এক্ষেত্রে টিকা না নেওয়া ব্যক্তিই সেই সুযোগ তৈরি করে দেন। জন হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের মাইক্রোবায়োলজিস্ট এবং ইমিউনোলজিস্ট অ্যান্ড্রু পেকোজ বলেছেন, ভাইরাসের মধ্যে যখন রূপান্তর ঘটে তখন এটি কাউকে সংক্রমিত করতে পারলে তার জন্য জনসাধারণের মাঝে ভাইরাসটি ছড়ানো সহজ হয়ে যায়।
যেসব ভাইরাস ছড়াতে পারে না, তাদের রূপান্তরও ঘটে না। ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টগুলো এখন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বি.১.১.৭ অথবা আলফা ভ্যারিয়েন্ট প্রথম যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হয়েছিল। বি.১.৩৫১ বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায়, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অথবা বি.১.৬১৭.২ প্রথম ভারতে শনাক্ত হয়। এছাড়া যুক্তরাজ্যেও বেশ কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে। এর মধ্যে বি.১.৪২৭ অথবা এপসিলোন প্রথম ক্যালিফোর্নিয়ায় এবং বি.১.৫২৬ অথবা ইটা ভ্যারিয়েন্ট প্রথম নিউইয়র্কে শনাক্ত হয়েছিল।
সান নিউজ/এমআর