আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে আইনশৃঙ্খলf রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কাশ্মিরের স্বাধীনতাকামী লস্কর-ই তৈয়বার পাঁচ ও একজন ভারতীয় সেনা সদস্য রয়েছে। বুধবার (৩০ জুন) রাত থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার (২ জুলাই) পর্যন্ত কাশ্মিরের একাধিক স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন।
ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, কাশ্মিরের রাজপোরায় বৃহস্পতিবার রাতে শুরু হওয়া বন্দুকযুদ্ধে ছয়জনের প্রাণ গেছে।
পুলিশ বলছে, নিহতদের মধ্যে পাঁচজনই কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার সদস্য। সংঘর্ষে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক সদস্যও নিহত হয়েছেন।
গত কয়েক সপ্তাহে ভারত অধিকৃত ব্যাপক বিবাদপূর্ণ এই অঞ্চলে নতুন নতুন সংঘাতের ঘট্না ঘটছে। বুধবার কাশ্মিরের কুলগামের জঙ্গলে বন্দুকযুদ্ধে লস্কর-ই-তৈয়বার তিন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। লস্করের শীর্ষ নেতা নাদিম অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের সময় মারা গেছেন বলে পুলিশ দাবি করার পরদিন কুলগামে সংঘর্ষে নিহত হন তারা।
পুলিশের দাবি, সোমবার বন্দুকযুদ্ধ চলাকালীন লস্কর নেতা আবরারকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে নিয়ে একটি বাড়িতে রাইফেল উদ্ধারে যায়। ওই বাড়িতে তিনি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। সেখানে আবরারের সহযোগীরা ভারতীয় সৈন্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালালে নিহত হন তিনি।
গত তিনদিনে হামলা চালিয়ে লস্করের যোদ্ধারা কাশ্মিরের পুলিশের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পুলিশের বিশেষ শাখার একজন কর্মকর্তা এবং তার স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যা করে। এরপরই আইনশৃঙ্খলবাহিনী কুলগামে অভিযান চালায়। এতে লস্করের পাঁচ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এই উপত্যকায় ৬১ কাশ্মিরি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। গত সপ্তাহে অধিকৃত জম্মুর প্রধান বিমানবন্দরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় দুই কর্মকর্তা আহত এবং একটি ভবন হালকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ভারতীয় সামরিক বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে উপত্যকার আটটি রাজনৈতিক দলের ১৪ জন বৈঠক করার পর সেখানে এই সহিংসতা দেখা দেয়। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতের পার্লামেন্টে জম্মু-কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত ভারতীয় সংবিধানের বিশেষ অনুচ্ছেদ বাতিল হয়ে যাওয়ার পর উপত্যকার রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়। সেই বন্দিদশা কাটিয়ে প্রথমবারের মতো দিল্লিতে মোদির ডাকে বৈঠকে যোগ দেওয়া ১৪ নেতার মধ্যে কাশ্মিরের সাবেক তিন মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন।
সাননিউজ/এমএইচ