আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আর্কটিক সাগরে বরফ-সাম্রাজ্যের শেষ ঠিকানাতেও এবার বড়সড় চিড় ধরতে শুরু করেছে। উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়ল সেই উদ্বেগজনক ছবি। সেই বরফ-সাম্রাজ্য রয়েছে গ্রিনল্যান্ডের উত্তর থেকে শুরু করে কানাডার দিকে আর্কটিক সাগরের দ্বীপপুঞ্জগুলি পর্যন্ত। যা ‘লাস্ট আইস এরিয়া’ নামে জগদ্বিখ্যাত।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা এই উদ্বেগজনক খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘কমিউনিকেশন্স আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’-এ।
এর আগে গ্রীষ্মেও আর্কটিক সাগরের এই বরফ-সাম্রাজ্যের কোনও হেলদোলই হত না। গলত না একচিলতেও। এতটাই জমাট বাঁধা ছিল সেই বরফ। তাই গ্রীষ্মে আর্কটিক সাগরে মেরুভল্লুকদের শেষ ঠিকানা ছিল এই বরফ-সাম্রাজ্যই। সাগরের অন্য জায়গার বরফ গ্রীষ্মে গলে যেতে শুরু করলে শাবকদের বাঁচাতে এই বরফ-সাম্রাজ্যে চলে আসত সামুদ্রিক সিল। সেটাই ছিল তাদের কাছে শেষ আশ্রয়। বরফের মধ্যে বানানো গর্তে তারা রেখে দিত তাদের শাবক। আর সেটা তাদের পরম প্রিয় খাদ্য বলে গ্রীষ্মে আর্কটিক সাগরের এই শেষ বরফ-সাম্রাজ্যই হয়ে উঠত মেরুভল্লুকদের প্রিয় জায়গা। থাকার জন্য, খেয়ে বাঁচার জন্য।
গত বছরের অগস্টে বিভিন্ন ভূপর্যবেক্ষণ উপগ্রহের পাঠানো তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেন, সারা বছর যেখানে পুরু বরফ জমে থাকে আর্কটিক সাগরের সেই একাংশ ওয়ান্ডেল সাগরে গত বছরের অগস্টে ভয়ঙ্করভাবে চিড় ধরেছে বরফ-সাম্রাজ্যে। আর্কটিক সাগরে বিশাল বিশাল বরফের পুরু স্তরগুলো ভাসতে ভাসতে গিয়ে থমকে যায় গ্রিনল্যান্ড আর কানাডার উত্তর উপকূলে। উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়েছে সেখানেও সমুদ্রের বরফের ঘনত্ব ৫০ শতাংশ কমে যায় গত অগস্টে। যা গ্রীষ্মে আর্কটিক সাগরে বরফের ঘনত্ব কমে যাওয়ার সর্বকালীন রেকর্ড।
গবেষকরা আর্কটিক সাগরের এই শেষ বরফ-সাম্রাজ্যে এত বড় চিড় ধরার দু’টি কারণ দেখিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, সংলগ্ন এলাকায় বাতাসের গতির তীব্রতা বহু গুণ বেড়ে গেছে গত এক দশকে। যার পরোক্ষ কারণ উষ্ণায়ন। তার জন্য সাম্রাজ্যের অন্তত ৮০ শতাংশ বরফে বড়সড় ফাটল ধরেছে। বাকি ২০ শতাংশ বরফ গলার জন্য সরাসরি দায়ী উষ্ণায়ন। যার এক ও একমাত্র কারণ মানুষই।
সান নিউজ/এমআর