আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সাপে কাটালো এক শিশুকে। সাপে কামড়ানোর পর তাকে হাসপাতালের পরিবর্তে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারপর ওঝার পরামর্শেই কলাগাছের ভেলায় শিশুটিকে নদীতে ভাসিয়ে দেন বাবা। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার।
এই আধুনিক যুগেও ভারতে কুসংস্কারের বলি হলো হলো এক শিশু। পরে খবর পেয়ে নদী থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাদতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার গোসাবা থানার কালিদাসপুর গ্রামে ঘটেছে এই ঘটনা।
পুলিশসূত্রে জানা গেছে, মৃত ও ওই শিশুটির নাম পূজা মৃধা (১০)। শুক্রবার রাতে বাবা দীপ মৃধার সঙ্গে ঘুমিয়েছিল সে। ঘুমন্ত অবস্থাতেই রাত আনুমানিক পৌনে ১১ টার দিকে সাপের ছোবলের শিকার হয় পূজা।
ঘটনা ঘটার পরপরই মেয়েকে বাঁচানোর জন্য তাকে নিয়ে ওঝার কাছে ছুটে যান দীপ মৃধা। পরিবারের সদস্যরা পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার পর প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ঝাড়ফুঁক করা হয় মেয়েটিকে। তারপর তাকে কলার ভেলায় নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন ওঝা।
এদিকে, মেয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে নিয়ে ওঝার বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয় মোল্লাখালী প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলেন দীপ মৃধা; কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগেই মৃত্যু হয় পূজার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সঠিক সময় নিয়ে এলে তার প্রাণে বাঁচানো যেত।
মেয়ে মারা যাওয়ার পর তাকে আবার জীবিত অবস্থায় ফিরে পাওয়ার আশায় শেষে ওঝার নিদানই মেনে নেন দীপ মৃধা; কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেন সারসা নদীতে।
কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে এ ঘটনা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় গোসাবা থানার পুলিশ সদস্যরা সারসা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেন পূজার মরদেহ। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ওই ওঝা বর্তমানে পলাতক আছেন। তার খোঁজে ইতোমধ্যে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। পরিবারের লোকজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন গোসাবা থানা পুলিশের কর্মকর্তারা।
সাননিউজ/এএসএম