আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংঘাতকবলিত আফগানিস্তান থেকে সেনাদের ফিরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ৫০ হাজার আফগানকেও দেশটি থেকে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত ২০ বছর ধরে আমেরিকান সেনাদের সঙ্গে কাজ করা আফগান দোভাষী আর তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চলছে এমন চিন্তাভাবনা।
বিদেশি সেনাদের সঙ্গে কাজ করা আফগানদের নিরাপত্তার বিষয়ে অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে তালেবান। কিন্তু প্রতিশোধের বলি হওয়ার আশঙ্কায় সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদেশগমনপ্রত্যাশী আফগানদের সংখ্যা। ভিসার জন্য এরই মধ্যে আবেদন করেছেন ৯ হাজার আফগান।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা মাইক ম্যাককল।
টেক্সাসের এই আইনপ্রণেতা স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, নিজ দেশ থেকে অর্ধলক্ষ আফগানকে সরিয়ে নেয়া হবে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত আর কাতারে।
চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোর সেনাদের প্রত্যাহারের পরিকল্পনা রয়েছে।
বিদেশি সেনা যাওয়ার আগেই নিরাপত্তাঝুঁকিতে থাকা আফগান নাগরিকদের সরিয়ে নিতে চায় বাইডেন প্রশাসন।
ওয়াশিংটন বলছে, আফগান এই নাগরিকরা যেন নিরাপদে নিজেদের ভিসাবিষয়ক সব প্রক্রিয়া সেরে নিতে পারেন, বিদেশি সেনাদের উপস্থিতি থাকতে থাকতেই তা নিশ্চিত করা হবে।
সব ঠিক থাকলে আবেদনের ৯ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে তাদের ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানে সহিংসতা আরও বাড়বে এবং দেশটির ধর্মভিত্তিক সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন তালেবানের শাসন কায়েমের শঙ্কার মধ্যেই সামনে এলো বিষয়টি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের হিসাব অনুযায়ী, আফগানিস্তানের ৪১৯টি জেলার মধ্যে ৮১টি এরই মধ্যে দখল করেছে তালেবান।
এ অবস্থায় হোয়াইট হাউজে বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন বৈঠক করেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সঙ্গে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের পরও দেশটির সঙ্গে মিত্রতা অব্যাহত রাখা ছিল দুই নেতার আলোচনার মূল বিষয়বস্তু। আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থান রোধ নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার পাওয়ার বিষয়ে মরিয়া ঘানি।
গত কয়েক সপ্তাহে আফগানিস্তানে সহিংসতা তীব্র রূপ নিয়েছে। একের পর এক হামলায় প্রাণ গেছে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষের।
কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে তালেবান যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়ছে আফগান সেনাবাহিনী।
আফগান সরকার ও তালেবানের শান্তি আলোচনা থমকে আছে। বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর তালেবানদের দৌরাত্ম্য কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী, তাও অস্পষ্ট।
বিদেশি ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের স্মরণকালের দীর্ঘতম যুদ্ধ পরিচালনা হয়েছে আফগানিস্তানে।
সান নিউজ/এসএম