আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মায়ের বুকের দুধ তাও আবার ল্যাবে তৈরি। বিষয়টা আর্শ্চযজনক হলেও সত্য। মায়ের বুকের গ্রন্থি থেকে নেওয়া কোষ-কালচারের মাধ্যমে সম্প্রতি ল্যাবরেটরিতে প্রথমবারের মতো বুকের দুধ তৈরির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনা ভিত্তিক স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠান বায়োমিল্ক।
এই উদ্ভাবন শিশু খাদ্যের বাজারে নতুন করে সাড়া ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে পরিবেশ সম্মত এই উদ্ভাবনের প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে তা নিয়েও রয়েছে ব্যাপক উদ্বেগ।
শিশু খাদ্য নিয়ে ডাক্তাররা প্রায়ই বলে থাকেন মায়ের দুধই শিশুদের সবচেয়ে ভালো খাবার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুদের কেবল মায়ের বুকের দুধ আর দুই বছর বয়স পর্যন্ত অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি বুকের দুধ খাওয়ানোর সুপারিশ করে থাকে।
শিশুদের স্বাস্থ্য গঠনে মায়ের বুকের দুধের ভূমিকা অনন্য। তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে সব সময় চাইলেও শিশুরা মায়ের বুকের দুধ পায় না।
ধারণা করা হয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের এক চতুর্থাংশ মা ছয় মাস পর্যন্ত কেবল বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন। ব্যাথা, অপার্যাপ্ত দুধ, এবং অস্বস্তিসহ নানা কারণে এমনটা হয়ে থাকে। সেই কারণে ১৮৬৫ সালে শিশু খাদ্যের ফরমুলা উদ্ভাবনের পর থেকে তা লাখ লাখ বাবা-মায়ের কাছে বিশ্বস্ত বিকল্প হয়ে উঠেছে।
তবে বুকের দুধের বিকল্প হিসেবে যখন ফরমুলা ব্যবহার করা হয় তখন এর কিছু জটিলতাও আছে। বুকের দুধে শিশুদের যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে ফরমুলায় তা হয়ে ওঠে না।
তবে ল্যাবরেটরিতে উদ্ভাবন করা বুকের দুধে প্রোটিন, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাটি এসিডসহ অন্যান্য বায়োঅ্যাকটিভ লিপিড থাকে। যার সঙ্গে মায়ের বুকের দুধের যথেষ্ট মিল রয়েছে। তবে প্রস্তুতকারী কোম্পানিটি স্পষ্ট করে বলেছে, তাদের উদ্দেশ্য কোনওভাবেই মায়ের আসল বুকের দুধের বিকল্প হয়ে ওঠা নয়।
প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা বায়োলোজিস্ট লেইলা স্ট্রিকল্যান্ড বলেন, আমার সঙ্গে যারাই বায়োমিল্ক নিয়ে কথা বলেছে তাদেরই বলেছি এটা আমরা মা ও শিশুদের জন্য করছি। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি বুকের দুধ খাওয়ানোর ব্যর্থতার ক্ষেত্রে আমাকে যদি কেউ এই সুযোগটি দিতো তাহলে তা আমি নিতাম।
বায়োমিল্ক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের উদ্ভাবিত বুকের দুধ কোনওভাবেই মায়ের আসল দুধের বিকল্প নয়। আর এটা কখনওই তা হয়ে উঠবে না। স্ট্রিকল্যান্ড বলেন, হরমোনাল পরিবর্তন, শিশুর সংকেত, ত্বকের সঙ্গে ত্বকের যোগাযোগ এবং পরিবেশগত প্রবাব সবকিছুই বুকের দুধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এছাড়া মায়ের বুকের দুধে যে পরিমাণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় তা কোনওভাবেই ল্যাবরেটরিতে তৈরি দুধে সম্ভব নয়।
সূত্র: ওডিসিটি সেন্ট্রাল
সাননিউজ/এএসএম