আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যায় অংশ নেওয়া সৌদি আরবের চার ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে আধাসামরিক প্রশিক্ষণ নিয়েছিল বলে এক রিপোর্টে উঠে এসেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অনুমোদনেই ওই ব্যক্তিরা সেখানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল।
নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, খাসোগিকে হত্যার এক বছর আগে সৌদি আরবের ওই চার এজেন্টকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে আরাকানসাসভিত্তিক সিকিউরিটি কোম্পানি ‘টায়ার ১ গ্রুপ’। এই কোম্পানির মালিক বেসরকারি সম্পদ ব্যবস্থাপনা গ্রুপ সারবেরাস ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট।
‘টায়ার ১ গ্রুপের’ মালিক সারবেরাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা লুইস বারমার ওই প্রশিক্ষণে তাদের কোম্পানির সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পেন্টাগনের একটি শীর্ষ পদে মনোনয়নের সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের কাছে এ তথ্য জানান তিনি।
‘টায়ার ১ গ্রুপের’ পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই প্রশিক্ষণে ‘নিরাপদ লক্ষ্যভেদ’ এবং ‘হামলা মোকাবিলার’ মতো বিষয়গুলোও ছিল। চারজনের প্রশিক্ষণে আত্মরক্ষামূলক এবং সৌদি আরবের নেতাদের সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে তাতে জোর দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া নজরদারি ও স্বল্পপরিসরে লড়াইয়ের ওপরও তাদের প্রশিক্ষিত করা হয়।
২০১৯ সালে ওয়াশিংটন পোস্টে প্রথম দাবি করা হয়, সাংবাদিক খাসোগিকে হত্যাকারী দলের চার সদস্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। ওই কলামে বলা হয়, সিআইএ তৎকালীন প্রশাসনকে সতর্ক করেছিল, টায়ার ১ গ্রুপ তাদের নিবন্ধন ব্যবহার করে বিশেষ ধরনের কোনো প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে, যা সন্দেহজনক।
চার সৌদি নাগরিককে টায়ার ১ গ্রুপে প্রশিক্ষণ নেওয়ার নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়ে তারা অবগত ছিলেন কিনা তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাসের বক্তব্য জানা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ২০১৪ সালে প্রথম সৌদি রয়াল গার্ড বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে ‘টায়ার ১ গ্রুপকে’ অনুমতি দেয়। বারাক ওবামার আমলে শুরু হওয়া ওই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তার উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে অন্তত প্রথম এক বছর ছিল।
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে নির্মমভাবে হত্যা করে সৌদি গুপ্তচররা। পরে তার লাশ কেটে টুকরো টুকরো করে দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাসোগি হত্যায় সৌদি আরবের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যুবরাজ মোহাম্মদ অনুমোদন দিয়েছিলেন। পশ্চিমা বিশ্বে এমবিএস নামে পরিচিত যুবরাজ শুরু থেকেই হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সান নিউজ/এমএম