আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে অনেকের ক্ষতি হচ্ছে ফুসফুসের। করোনা সংক্রমণের কারণে ফুসফুস অকার্যকর হয়ে অনেকের প্রাণহানিও হচ্ছে।
তবে এর পাশাপশি ভাইরাসে সংক্রমণের পর কিডনি বিকল হয়েও মারা যাচ্ছেন অনেকে। সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। করোনা সংক্রমণের পর কিডনি বিকল হয়ে রাজ্যটিতে মারা গেছেন ৩ রোগী।
মৃত ওই ৩ রোগীর ময়নাতদন্তে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের কিডনির বহু কোষ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে শরীরে বিপুল পরিমাণে দূষিত পদার্থ জমে যায়। আর তাতেই মৃত্যু হয় তাদের।
করোনায় সংক্রমিত হলে কি ফুসফুসের মতো কিডনিরও ক্ষতি হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নে জবাবে চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, ‘অবশ্যই পারে। রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসগুলো সব কোষের মাধ্যমে শরীরে ঢুকতে পারে না। দরকার ‘এসিই ২ রিসেপটর’ কোষ। শ্বাসনালী, ফুসফুস, অন্ত্র, হৃদযন্ত্র, কিডনিতে এই ধরনের কোষের পরিমাণ বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনার কারণে ফুসফুস এবং শ্বাসনালীর ‘এসিই ২ রিসেপটর’গুলোতে প্রাথমিক সংক্রমণ হয়। পরে জীবাণুটি রক্তের সংস্পর্শে আসে। রক্তের রোগপ্রতিরোধকারী কোষগুলোর মাধ্যমেই করোনার মতো জীবাণু সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুদ্রান্তে পৌঁছে আন্ত্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করে। একইসঙ্গে কিডনিতে পৌঁছে তার কোষও নষ্ট করতে থাকে।’
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে কিডনি বিকল হয়ে মারা যাওয়া ৩ রোগীর ময়নাতদন্তের পরে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, করোনার জীবাণু ওই ৩ ব্যক্তির কিডনির কোষকে এমন ভাবে নষ্ট করে ফেলেছিল যে, তাদের শরীরের দূষিত পদার্থ ছেঁকে নিয়ে রক্ত বিশুদ্ধ করার ক্ষমতা হারিয়ে যায়।
চিকিৎসকদের বক্তব্য, এক একটি জীবাণু আলাদা আলাদা পরিবেশে আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করে। ভারতীয় পরিবেশে করোনার জীবাণু ব্যাপক হারে কিডনির ক্ষতি করতে পারে। এমন আশঙ্কার কথাই ভাবছেন তারা।
চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছে, আমেরিকার চিকিৎসকদের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৩৬ শতাংশ করোনা রোগীরই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার ভাষায়, ‘তাই কেউ করোনায় সংক্রমিত হলে আমরা প্রথমেই রক্তপরীক্ষা করাতে পরামর্শ দেই। অর্থাৎ রক্তে দূষিত পদার্থের পরিমাণ বাড়ছে কি না সেটা পরীক্ষা করা হয় আগে।’
সাননিউজ/এএসএম