সান নিউজ ডেস্ক : সহিংসতা, নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে বিশ্বে প্রতিনিয়ত শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব বর্তমানে ২ কোটি ৬৪ লাখ শরণার্থী রয়েছেন, যা ২০১৯ সালে ছিল ২ কোটি ৬০ লাখ। অর্থাৎ এক বছরে শরণার্থীর সংখ্যা ৪ লাখ বেড়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) হিসেব বলছে, বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের মধ্যে সিরিয়া থেকে ৬৮ লাখ, ভেনেজুয়েলা থেকে ৪৯ লাখ, আফগানিস্তান থেকে ২৮ লাখ, দক্ষিণ সুদান থেকে ২২ লাখ ও মিয়ানমার থেকে ১১ লাখ শরণার্থী রয়েছে।
বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (১৮ জুন) জেনেভা থেকে প্রকাশিত ইউএনএইচসিআরের বার্ষিক রিপোর্ট এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৮ কোটি ২৪ লাখ, যা ২০১৯ সালে ছিল ৭ কোটি ৯৫ লাখ। অর্থাৎ এক বছরে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ২৯ লাখ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বল প্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মানুষদের ৪২ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে। ২০১৮ ও ২০২০ সালের মধ্যে মোট ১০ লাখ শিশুর জন্ম হয়েছে, যারা জন্ম থেকেই শরণার্থী। তাদের মধ্যে অনেকেই আগামী বছরগুলোতেও শরণার্থী হয়েই থাকতে হবে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, গত বছরে প্রায় ৩২ লাখ আভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ও ২ লাখ ৫১ হাজার শরণার্থী নিজ বাড়িতে ফিরতে পেরেছেন। এই সংখ্যা ২০১৯ সালের তুলনায় যথাক্রমে ৪০ ও ২১ শতাংশ কম। এদের মধ্যে প্রায় ৩৩ হাজার ৮০০ শরণার্থী তাদের আশ্রয় দানকারী দেশে স্বাভাবিক অবস্থান পেয়েছেন।
ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে হতাশা প্রতিফলিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের যেমন ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি তাদের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত। কারণ নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবাসন এখন সুদূরপরাহত।
ইউএনএইচসিআরের হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশন ও গ্লোবাল কম্প্যাক্ট অন রিফিউজিস (শরণার্থীদের জন্য বৈশ্বিক সংহতি)-এর মাধ্যমে আমরা বাস্তুচ্যুত ও শরণার্থীদের সাহায্যে আইনি কাঠামো ও অন্যান্য উপায় পাচ্ছি। কিন্তু আমাদের এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন অনেক বেশি রাজনৈতিক সদিচ্ছা। তাহলে বাস্তুচ্যুতির মূল কারণ সংঘাত ও নিপীড়ন কমানো যাবে।
ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, এই সংকটগুলোর সমাধানের জন্য বৈশ্বিক নেতাদের এবং প্রভাবশালীদের তাদের মতপার্থক্য, রাজনৈতিক অহংকার দূরে রাখতে হবে। সংঘাত প্রতিরোধ ও সমাধান এবং মানুষের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান বজায় রাখা উচিত বিশ্ব নেতাদের।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ২০ জুন প্রথম বিশ্ব শরণার্থী দিবস পালিত হয়। ২০০০ সালের ডিসেম্বরের আগে দিবসটি আফ্রিকা শরণার্থী দিবস হিসেবে পালিত হতো। ১৯৫১ সালে শরণার্থীদের স্বীকৃতির বিষয়ে জাতিসংঘের সনদটি গৃহীত হয়।
সান নিউজ/এসএম