আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সরকারদলীয় ও বিরোধী আইনপ্রণেতাদের সংঘর্ষে মঙ্গলবার কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পাকিস্তানের পার্লামেন্ট। ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতারা বাজেট অধিবেশনে বিরোধীদলীয় নেতা শেহবাজ শরিফের বক্তব্য দ্বিতীয় দিনের মতো ব্যাহত করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
ওই সময় এক পক্ষ আরেক পক্ষের দিকে বাজেটের নথি ও বই ছুড়ে মারে।
দ্য ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে পার্লামেন্ট অধিবেশনে আসেন কয়েকজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীসহ ট্রেজারি সদস্যরা। তারা শেহবাজ শরিফের বক্তব্যের সময় স্লোগান, শোরগোলের পাশাপাশি টেবিল চাপড়াতে থাকেন।
ওই সময় তাদের থামাতে ব্যর্থ হন স্পিকার আসাদ কায়সার। তাকে তিনবার পার্লামেন্ট কার্যক্রম স্থগিত করতে হয়।
অন্যদিকে সরকারদলীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের যেকোনো আক্রমণ থেকে বাঁচাতে দলের সদস্যরা ঘিরে রাখেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) সভাপতি শেহবাজ শরিফকে।
স্পিকার পার্লামেন্টের অধিবেশন প্রথম স্থগিত করেন ৪০ মিনিটের জন্য। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশেষ সহকারী আলি নাওয়াজ খান বিরোধীদের দিকে একটি বই ছুড়ে মারার পর স্পিকারকে এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। অবশ্য সে বই আলি নাওয়াজের দিকে পাল্টা ছুড়ে মারেন বিরোধী এক আইনপ্রণেতা।
এ ঘটনার পর অস্ত্রধারী দুই ডজনের বেশি সার্জেন্ট দুই পক্ষের আইনপ্রণেতাদের মধ্যে মানবদেয়াল হয়ে দাঁড়ালে স্পিকার কার্যক্রম আবার শুরু করেন।
কয়েক দশক ধরে পার্লামেন্ট কাভার করা সাংবাদিকদের জন্য এটি ছিল নজিরবিহীন ঘটনা।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর শেহবাজ শরিফ বক্তব্য শুরু করেন। তিনি অর্থনৈতিক বিভিন্ন নীতির জন্য সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন।
তার বক্তব্যের জবাবে ট্রেজারি সদস্যরা দাঁড়িয়ে শোরগোল, টেবিল চাপড়ানো ও স্লোগান দিতে থাকেন। তারা বিরোধীদের উদ্দেশে ‘চোর, চোর’, ‘ডাকু, ডাকু’ স্লোগান দিতে থাকেন।
কিন্তু দমার পাত্র নন শেহবাজ শরিফ। তিনি বক্তব্য অব্যাহত রাখেন।
প্রতিক্রিয়া হিসেবে ট্রেজারি সদস্যরা বিরোধী বেঞ্চগুলোর দিকে অগ্রসর হন। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের মাঝপথে আটকে দেয়।
এ পর্যায়ে এসে ট্রেজারি সদস্যরা বিরোধীদের দিকে বই ও নথি ছুড়তে থাকেন। বিরোধীরাও একই কায়দায় সরকারি দলের সদস্যদের সামলান।
আলি নাওয়াজ আওয়ানসহ কয়েকজনকে অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করতে শোনা যায়। এ সময় দুই পক্ষের অনেক আইনপ্রণেতাকে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সান নিউজ/এসএম