আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রতি বছরের মতো এবারও শীর্ষ চাল আমদানিকারক দেশ হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রাখবে চীন।মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেইন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস চালের বৈশ্বিক উৎপাদন নিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এমনটিই জানিয়েছে। একই সঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে ফিলিপাইন অবস্থান করবে বলে জানিয়ে তারা।
সংস্থাটির সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, চীন এ বছরও বৈশ্বিক চাল আমদানিতে হিস্যা বাড়াবে। দেশটি চলতি বছর সব মিলিয়ে ৩২ লাখ টন চাল আমদানি করতে যাচ্ছে। এ সময় ফিলিপাইন আমদানি করবে ২১ লাখ টন চাল। এতে দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে উঠে আসবে দেশটি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর চীন ২৯ লাখ টন চাল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। এক্ষেত্রে ফিলিপাইন আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ২০ লাখ টন চাল। দেশ দুটিই তাদের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশি চাল আমদানি করতে সক্ষম হবে বলে জানায় ইউএসডিএ।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, করোনার প্রভাব কাটিয়ে চীনের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। সচল হচ্ছে দেশটির বাণিজ্য। পাশাপাশি দেশটিতে খাদ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ছে। চালের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে দেশটি এ বছরও আমদানির পরিমাণ বাড়িয়েছে।
অন্যদিকে চাল আমদানিতে বড় পরিবর্তন এসেছে ফিলিপাইনের। বৃদ্ধিপ্রাপ্ত চাহিদা পূরণে দেশটি যথাযথ সাড়া দিচ্ছে। জার্মানিভিত্তিক বাজার গবেষণা ও অনুসন্ধানবিষয়ক পোর্টাল স্ট্যাটিস্টা এ বছরের এপ্রিলে শীর্ষ চাল আমদানিকারক দেশের তালিকা প্রকাশ করেছিল। এতে চীনের পরই ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান। তবে চলতি মাসে ইউএসডিএর প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফিলিপাইন এ বছর দ্বিতীয় শীর্ষ আমদানিকারক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে।
ঊর্ধ্বমুখী চাহিদার পাশাপাশি আমদানি শুল্কে ছাড় দেশটির আমদানিকারকদের আমদানি বৃদ্ধিতে সহায়তা দিয়েছে। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো থেকে চাল আমদানির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে দেয় দেশটির সরকার। এক্ষেত্রে রফতানিকারক দেশগুলোও একই সুবিধা ভোগ করছে। মূলত এ কারণেই চলতি বছর ফিলিপাইনের চাল আমদানি বেড়েছে।
ইউএসডিএ জানায়, ফিলিপাইনে চাল সরবরাহের ক্ষেত্রে আশিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রসিদ্ধ ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড। করোনাকালীন নানা ধরনের বিধিনিষেধ চলাকালে দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক, নৈকট্য এবং এক দেশের সরকারের সঙ্গে অন্য দেশের সরকারের চুক্তির সক্ষমতা অব্যাহত ছিল। এতে এসব দেশের বাণিজ্য ত্বরান্বিত হয়েছে।
ভিয়েতনামের রফতানি চালের দাম তুলনামূলক কম। ফলে ২০১৯ সাল থেকেই ফিলিপাইনের প্রধান চাল সরবরাহকারী দেশে পরিণত হয়েছে ভিয়েতনাম। যদিও চলতি বছর ভারতসহ অন্যান্য রফতানিকারক দেশগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভিয়েতনাম থেকে আমদানির পরিমাণ কমে আসতে পারে। তবে কমলেও এ বছর অন্যান্য দেশের তুলনায় ভিয়েতনাম ফিলিপাইনে সবচেয়ে বেশি চাল সরবরাহ করবে। এদিকে ভারত ও পাকিস্তানের মতো আসিয়ান জোটের বাইরের দেশগুলোতে চালের বাজার অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক। তবে শুল্কের হার কমে আসায় এসব দেশের চালের দামও কমতে পারে। ফলে আসিয়ানের বাইরে থেকেও বড় পরিসরে চাল কেনার সম্ভাবনা রয়েছে ফিলিপাইনের। তবে ইউএসডিএ বলছে, আসিয়ানের বাইরের দেশগুলোকে ভোক্তা অধিকার সচেতনতায় কাজ করতে হবে। পাশাপাশি ফিলিপাইনের সঙ্গে এসব দেশের বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। এর মাধ্যমে ফিলিপাইনের আমদানি বাজারের গুরুত্বপূর্ণ হিস্যা পেতে পারে দেশগুলো।
সান নিউজ/এমএইচ