আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের একটি দোকানের কর্মীকে দেশটিতে নিযুক্ত বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী চড় মারার ঘটনা ঘটে। আর এতে রাষ্ট্রদূতকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিয়েছে বেলজিয়ামের সরকার। সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার বেলজিয়াম দূতাবাস।
বেলজিয়ামের ওই রাষ্ট্রদূতের নাম পিটার লেসকোহিয়ার এবং তার স্ত্রীর নাম জিয়াং জেকিউ। গত এপ্রিলে সিউলের একটি পোশাকের দোকানের কর্মচারীকে চড় মেরেছিলেন তিনি।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, ওই দোকানের এক কর্মীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাকে চড় মেরেছেন জিয়াং।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিয়াং দোকান থেকে পোষাক নিয়ে দাম না দিয়ে চলে যাচ্ছেন, এক দোকানকর্মী এই সন্দেহ প্রকাশের পর তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় জিয়াংয়ের এবং এর এক পর্যায়ে ওই কর্মীর গায়ে হাত তোলেন জিয়াং।
পরে অবশ্য, ‘রুঢ় ও অগ্রহণযোগ্য’ ব্যবহারের জন্য ওই দোকানকর্মী সঙ্গে দেখা করে তার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন জিয়াং জেকিউ। লেসকোহিয়ার নিজেও স্ত্রীর এই রূঢ় ব্যবহারে ক্ষমা চেয়েছেন ওই কর্মীর কাছে, কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি।
চলতি গ্রীষ্মেই তাকে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোফিয়া উইলমেস। লেসকোহিয়ার তিন বছর দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ বিষয়ে বেলজিয়ামের দূতাবাস থেকে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘বেলজিয়ামের একজন রাষ্ট্রদূত হিসেবে পিটার লেসকোহিয়ার যথেষ্ট সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তার দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তবে এখণ যে পরিস্থিতি, তাতে তার পক্ষে আর শান্তিপূর্ণভাবে এই দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়।’
যা ঘটেছিল দোকানে
গত ৯ এপ্রিল সিউলের ইয়ংসান গু এলাকার একটি পোষাকের দোকানে গিয়েছিলেন ৬৩ বছর বয়সী জিয়াং জেকিউ। দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় এক ঘণ্টা সেই দোকানে বেশ কয়েকটি পোশাক ট্রায়াল দেওয়ার পর কিছু না কিনেই চলে যাচ্ছিলেন জিয়াং।
তখন দোকানের একজন কর্মী তাকে অনুসরণ করেন। জিয়াংয়ের পরনে যে পোশাক ছিল সেটি তার নিজের নাকি দোকানের এবং দোকানের যদি হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে সেটির দাম না দিয়েই তিন চলে যাচ্ছেন কিন না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতেই তাকে অনুসরণ করছিলেন ওই কর্মী।
রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী পরে ওই দোকানকর্মীর সঙ্গে দোকানে ফিরে আসেন এবং সেখানে আসার পর তাদের বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়। সিসিটিভি-তে তাদের ঝগড়ার দৃশ্য ধরাও পড়ে। দোকানের আরেক কর্মী তাদের থামাতে এলে জিয়াং তাকে চড় মারেন এবং ধাক্কা দেন।
গত ৬ মে সিউল পুলিশ জিয়াংকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার আগে স্ট্রোকের কারণে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বলে বেলজিয়ান দূতাবাস থেকে জানানো হয়।
সূত্র: বিবিসি
সাননিউজ/এএসএম