আন্তর্জাতিক

৮০ হাজার জলদস্যু নিয়ন্ত্রণ করতেন যে নারী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সমুদ্র ছিল তার দখলে। ৮০ হাজার জলদস্যু তার আঙুলের ইশারায় উঠতো-বসতো। ১৮০০ এরও বেশি সংখ্যক যুদ্ধ জাহাজ ছিলো তার আয়ত্ত্বে। সেগুলো তার কথা অনুসারেই সমুদ্রের বিভিন্ন জাহাজ লুটপাটের কাজে নিযুক্ত ছিল। অথচ এই নারী একসময় বাস করতেন পতিতালয়ে।

ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ক্যান্টন শহরের ভাসমান পতিতালয়ে বাস করতেন এই নারী। অতঃপর সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় ও প্রণয় ঘটে চেং আইয়ের। যিনি ছিলেন দক্ষিণ চীন সাগরের এক ভয়ঙ্কর জলদস্যু। এক পর্যায়ে তারা বিয়ে করে সংসার বাঁধেন। বিয়ের পর থেকে স্বামীর সঙ্গে দুঃসাহসিক বিভিন্ন অভিযানেও অংশ নিতেন সাহসী এই নারী।

jagonews24

বলছি চিং শি এর কথা। ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত এবং সফল নারী জলদস্যুদের একজন ছিলেন তিনি। তার স্বামী ছিলেন চেং আই। স্বামীর কারণেই এই নারী এতোটা সফল জলদস্যু হয়ে উঠেছিলেন। কারণ তার স্বামী চেং আই ছিলেন একজন শক্তিশালী জলদস্যু। সমুদ্রের বিভিন্ন স্থানে তার ছোট ছোট জলদস্যুর দল ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত।

১৮০৪ সালের মধ্যেই চেং আইয়ের আয়ত্ত্বে ছিল ১২০০টি জাহাজ প্রায় ৭০ হাজার জলদস্যু। বিয়ের ৬ বছরের মাথায় ৪২ বছর বয়সে ১৮০৭ সালে, চেং আই মারা যান। এরপর চেং আইয়ের পরবর্তী উত্তরাধিকার হিসেবে দায়িত্ব চলে যায় তার পালকপূত্র চেং পো পো সই এরই উপরে।

jagonews24

তিনি একসময় চিং শি অর্থ্যাৎ সম্পর্কে তা মা হলেও, তার প্রেমে পড়েন। যা অবৈধ ছিল। তবুও ক্ষমতার লোভ সামলাতে না পেরে এই অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত হন চিং শি। পরবর্তীতে তাদের বিবাহ হয় এবং দস্যুরানী হয়ে ওঠেন তিনি। দ্বিতীয় স্বামীর সব দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে তুলে নেন।

অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও চতুর ছিলেন চিং শি। স্বামী মারা যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই পুরো দস্যুবাহিনীকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনেন। দস্যু জাহাজগুলোর জন্য একটি কঠোর আইন তৈরি করেছিলেন। তার নির্দেশ ছিলো, উপকূলীয় কোনো গ্রামবাসীদের কাছ থেকে লুটপাট করা যাবে না।

jagonews24

এ ছাড়াও জাহাজে অপহরণ করা নারী বা শিশুর সঙ্গে কোনো দস্যু যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হতে পারবেন না। এ কাজ করলে তার শিরচ্ছেদ করা হবে। যদিও পরবর্তীতে এ জাতীয় কাজের কারণে অনেক দস্যুকেই চিং শি মৃত্যুদণ্ড দেন শিরচ্ছেদ করে।

রিচার্ড গ্লাসপুল নামক একজন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী ১৮০৯ সালের সেপ্টেম্বরে চিং শি’র জলদস্যুদের হাতে ধরা পড়েন। ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত তাকে আটকে রাখা হয়েছিল দস্যুজাহাজে।

jagonews24

তিনি ভয়ঙ্কর ওই অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ৮০ হাজার জলদস্যুকে একাই নিয়ন্ত্রণ করতেন এই নারী। প্রায় হাজারখানেক বড় জাহাজ এবং ৮০০টি ছোট জাহাজ এবং নৌকা ছিল তার আয়ত্ত্বে।

টানা ৩ বছর সমুদ্রে দাঁপিয়ে বেড়ান এই নারী। ১৮১০ সালে চীন সরকারের কাছে ধরা পড়েন এই জলদস্যু দল। এরপর ক্ষমা প্রার্থনা করে অবসর গ্রহণ করেন চিং শি। ১৮৪৪ সালে ৬৯ বছর বয়সে মারা যান ইতিহাসের কুখ্যাত ও নিষ্ঠুর এই নারী।

সূত্র: অ্যাটলাস অবসকিউর

সান নিউজ/এসএম/বিএস

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

মিয়ানমারের দূতসহ ঢাকায় আসছেন মার্কিন ২ কর্মকর্তা

এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকায় আসছেন মার্কিন প্রশাসন...

গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিল বাটা

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভ...

টিভিতে আজকের খেলা

প্রতিদিনের মতো আজ সোমবার (৮ এপ্রিল) বেশ কিছু খেলা প্রচারিত হবে টেলিভি...

জানা গেল ২০২৫ সালের হজ ফ্লাইট শুরুর তারিখ

এবছর পবিত্র হজের প্রথম ফ্লাইট ২৯ এপ্রিল সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবে।...

নীলফামারীতে বাংলাদেশ স্কাউটস দিবস অনুষ্ঠিত

‘সাহসী ও দায়িত্বশীল আগামীর প্রজন্ম’ প্...

বগুড়ায় খুন করে হাসপাতালে রেখে গেল লাশ

বগুড়ার শেরপুরে পরকীয়ার জেরে কাবিল হোসেন (৪০) নামের...

ভালুকায় মুখোশধারী নারী নেতৃত্বে সশস্ত্র ডাকাতি

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাচিনা গ্রামে এক ভয়াবহ ড...

দেশে বিনিয়োগ সহজ করার লক্ষ্যে কাজ করেছি: প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এত অনুকূল পরিবেশ এর আগে কখনো ছিল না বলে মন্তব্য করেছ...

'বিমসটেককে গতিশীল করতে চান প্রধান উপদেষ্টা'

আগামী দুই বছরে চেয়ারম্যান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিমসটেককে একটি গতিশীল প্র...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা