আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারি শুরুর পর থেকে সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে ভারত। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে দৈনিক মৃত্যু রয়েছে চার হাজারের ওপরে, দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যাও আড়াই লাখের আশেপাশে।
এই অবস্থায় করোনার হাত থেকে বাঁচতে শুরু করা হয়েছে ‘করোনা দেবী’র পূজা। তৈরি করা হয়েছে পুরো মন্দির। বিশেষ প্রার্থনা সহযোগে ঢাকঢোলের সঙ্গে পূজা করা হচ্ছে করোনা দেবীর।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরে। সেখানে কামাটচিপুরী আধিনাম মন্দিরে বসানো হয়েছে ‘করোনা দেবী’র মূর্তি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ জানিয়েছে, মূল শহরের বাইরে অবস্থিত এই মন্দিরে রয়েছে দেড় ফুট লম্বা গ্রানাইট শিলায় নির্মিত ‘করোনা দেবী’। সাজানো হয়েছে ঘন কেশে লাল রঙের পোশাকে।
মন্দিরের এক সেবাইত জানান, ‘এই মারণাত্মক রোগকে একমাত্র করোনা দেবীই কাবু করতে পারেন। দেবীকে সন্তুষ্ট করতে ৪৮ দিনের বিশেষ প্রার্থনারও আয়োজন করা হয়েছে মন্দিরে। যদিও লকডাউন মেনে জনসাধারণের জন্য তা খুলে দেওয়া হবে না।’
মন্দিরের ম্যানেজার আনন্দ ভারতী বলেন, ‘রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচতে দেব-দেবীর শরণাপন্ন হওয়া বহু বছরের রীতি। প্লেগ মারিয়াম্মন মন্দিরের স্থাপন যেমন একটি উদাহরণ।’ বহু সাধনার পর মন্দির স্থাপনেই করোনার প্রতিকার খুঁজে পেয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিংশ শতাব্দীর শুরুতে তামিলনাড়ুতে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে। প্লেগ মারিয়াম্মন মন্দির স্থাপন করে সেখানে সেসময় প্রার্থনা করা হতো। ‘করোনা দেবী’র ওপর ভরসা রাখছেন স্থানীয়রাও। আর তাই এই মন্দিরে আয়োজন করা হবে যজ্ঞও।
তবে করোনা দেবীর মন্দির ভারতে এই প্রথম নয়। করোনা দেবীকে নিয়ে এটি ভারতের দ্বিতীয় মন্দির। গত বছর কেরালার কোল্লমা জেলায় এক পুরোহিত তার বাড়িতে করোনা তাড়াতে এমনই এক দেবীর মন্দির স্থাপন করেন।
মন্দিরের পুরোহিত বার্তাসংস্থা এএনআই’কে বলেন, ‘আমরা অব্যাহত ভাবে করোনা দেবীর পূজা করছি যেন তিনি আমাদের ওপর দয়া দেখান এবং ভাইরাসের হাত থেকে আমাদেরকে মুক্তি দেন।’
ভারতে করোনা মহামারির তাণ্ডব চলছেই। শুক্রবার (২১ মে) ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫৯১ জন। এর মাধ্যমে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ ৩১ হাজার ৯৯১ জনে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ২০৯ জন। এতে দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৩৩১ জনে।
সাননিউজ/এএসএম