আন্তর্জাতিক

খাবার ঘরে ক্ষেপণাস্ত্র, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী-সন্তানসহ গেল প্রাণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইয়াদ সালহার বয়স ৩৩ বছর। দুপুরে খাবার খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হুইলচেয়ারে বসা সমবয়সী স্বামী ইয়াদকে নিয়ে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আমানি ও তাদের তিন বছরের কন্যা নাঘামও প্রস্তুত। আচমকা তাদের বাড়িতে আঘাত হানে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র।

মুহূর্তেই সবকিছু বদলে যায়। গোটা বাড়ি পরিণত হয় ধ্বংসস্তুপে। ইয়াদ সালহা তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও তিন বছরের নিষ্পাপ শিশু নাঘামের প্রাণহানি ঘটে।

ইসরায়েল দশ দিন ধরে লাগাতার ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা চালাচ্ছে। সেই গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় ভূমধ্যসাগরের পাড়ে তিন কক্ষের একটি বাড়িতে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে থাকতেন ইয়াদ।

কিন্তু ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি তারা। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বাড়ির তিনটি কক্ষ লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তুপের ভেতর পড়ে রয়েছে তিনটি লাশ।

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও ছোট কন্যাসন্তানকে নিয়ে যে ঘরটিতে ইয়াদ সালেহ বসবাস করতেন সেই ঘরের সবকিছু সম্পূর্ণ ভেঙেচুরে গেছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে ছিল ছোট্ট মেয়েটির দুমড়েমুচড়ে যাওয়া লাল রঙের খেলনা সাইকেল।

দুপুরের খাবারের জন্য যে ফ্রিজ থেকে তারা খাবার বের করছিলেন, ভেঙে গেছে সেই ফ্রিজ। ভেঙে টুকরা টুকরা হয়ে গেছে টমেটো ভরা বাটিটিও।

ইসরায়েলি হামলার পর বাড়িটি থেকে মরদেহগুলো পাশের একটি হাসপাতালের মর্গে নিয়ে রাখে গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। সেই মর্গের সামনে অন্যান্য স্বজনদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ইয়াদ সালহার ৩১ বছর বয়সী ছোট ভাই ওমর সালহা বলেন, তার ভাই ইয়াদ সালগা গত ১৪ বছর ধরে হাঁটতে পারে না।

হুইলচেয়ারে বসেই তার দিনাতিপাত করতে হয়। তিনি কখনো ফিলিস্তিনের হয়ে অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ সংগ্রামও করতে নামেননি। অথচ তাকেও প্রাণ দিতে হলো।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে ওমর সালহা বলেন, ‘আমার ভাই কি দোষ করেছিল? তার তো দিনই কাটে হুইলচেয়ারে বসে। আর তার নিষ্পাপ ছোট শিশুটি বা কী অপরাধ করেছিল? কী করেছিল তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী? তারা তো সবাই মিলে দুপুরের খাবর খেতে প্রস্তুত হচ্ছিল। কিন্তু সেটাও খেতে পারলো না তারা।’

ওমর সালহা আরও বলেন, শারীরিকভাবে অক্ষম তার ভাই একজন বেকার মানুষ। মা ও অপর তিনজন ভাইয়ের সঙ্গে একটি ফ্ল্যাটে ভাগাভাগি করে বসবাস করতেন। তারা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। প্রতিবাদ কিংবা অস্ত্র হাতে না নিলেও আজ সপরিবারে প্রাণ গেল তার।

গত ১০ মে থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় যে লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তাতে এখন পর্যন্ত ৬৪ শিশুসহ যে ২২৭ জন ফিলিস্তিনির প্রাণহানি হয়েছে তাদের মধ্যে ইয়াদ, আমানি ও নিষ্পাপ নাঘামের মতো অনেক মানুষ রয়েছেন যারা নিরাপরাধ।

গাজার উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউসেফ আবু আল রশিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ঘরের মধ্যে নির্দোষ ব্যক্তিদের হত্যা করা বড় অপরাধ। আর কত মৃত্যু হলে বিশ্বের বিবেক জেগে উঠবে?’

সাননিউজ/এএসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

সিরাজগঞ্জে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল নির্মাণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশে প্রস্তাবিত ১০০০ বেডের চীন-বাংলাদেশ মৈত্র...

টিভিতে আজকের খেলা

প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) বেশ কিছু খেলা প্রচারিত হবে টেলিভিশনের পর...

শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন ইন্টারপোলে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে...

হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স; চিকিৎসক মাত্র চার জন

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র ৪ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে...

করোনাভাইরাস চীনের ল্যাবে তৈরি: বলছে যুক্তরাষ্ট্র

হোয়াইট হাউস শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে একটি নতুন...

খানপুর ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বাগেরহাট জেলা সদরের খানপুর ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি- বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়...

বগুড়ায় এক পুলিশকে ঘুষ না দেওয়ায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি

বগুড়ার শেরপুর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি এবং তা না দেওয়ায় মি...

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আবু নূর মো: শামসুজ্জামান ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক...

ভালুকায় বাঁশের বেড়া দিয়ে দরিদ্র পরিবারকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় একটি দরিদ্র পরিবারকে বাঁশের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করা হ...

লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যানসহ চার আ. লীগ নেতা আটক

লক্ষ্মীপুরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকে আটক করা...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা