আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলমান করোনা পরিস্থিতিতে অক্সিজেন, বেড, ভেন্টিলেটরের আকাল ভারত। নেই প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র। চারিদিকে শুধুই হাহাকার আর অসহায় মানুষদের আর্তনাদ। তবে শুধু ওষুধ বা হাসপাতালে বেডের আকাল নয়, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতজুড়ে সেফহোম বা আইসোলেশন সেন্টারেরও ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
ফলে করোনা সংক্রমিত হওয়ায় আইসোলেশন সেন্টারের অভাবে নিরুপায় হয়ে গাছের ডালে মাচা বানিয়ে আশ্রয় নিতে কার্যত বাধ্য হলেন এক যুবক।
ভারতে যখন গণহারে টিকাদানের কথা বলা হচ্ছে ঠিক তখনই প্রকাশ্যে আসছে করোনা পরিস্থিতির বিভিন্ন ছবি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এসব ছবিতে দেখা গেছে, গ্রামে একটিও সরকারি সেফহোম বা কোভিড সেন্টার না থাকায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কথা মাথায় রেখে কখনও বা শৌচালয়ে, খোলা মাঠে আবার কখনও গাছের ডালে অস্থায়ী মাচা করেই রাত কাটাতে হচ্ছে অনেক করোনা আক্রান্ত রোগীদের।
১৮ বছরের যুবক শিবার পরিস্থিতি এমনই। বাড়িতে আলাদা থাকার ঘরের অভাব, গ্রামে নেই আইসোলেশন সেন্টার। ফলে বাধ্য হয়ে সংক্রমণ ছড়ানো এড়াতে বাড়ির একপাশে থাকা গাছের ডালই এখন অস্থায়ী ঠিকানা তার।
তবে এই অবস্থা শিবার একার নয়, তেলেঙ্গানার নলগোন্ডা জেলার কোঠানন্দিকোন্ডা গ্রামের সবারই একই দশা। শুধু তাই নয়, করোনা মোকাবিলায় শহুরে মানুষ যেসব পরিষেবা পান সেগুলো সবই ধরা ছোঁয়ার বাইরে কোঠানন্দিকোন্ডা গ্রামের বাসিন্দাদের।
কারণ, শুধু করোনা পরিস্থিতি নয়, যেকোনও দরকারে ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন হলে যেতে হবে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এছাড়া অবস্থা গুরুতর হলে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে হলে যেতে হবে ৩০ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে।
এই বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে শিবা জানান, গ্রামে এতদিন পর্যন্ত কোনও কোভিড কেয়ার সেন্টার ছিল না। দু'দিন আগে তারা সবাই মিলে গ্রামেরই একটি হোস্টেলকে আইসোলেশন সেন্টারে পরিণত করেছেন।
এমনকি তাদের কোনও ধারণা নেই যে দেশের করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে এগোচ্ছে। ফলে গত ৪ মে শিবা করোনায় আক্রান্ত হলেও গ্রামের কেউই তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। তাই বাড়িতে জায়গার অভাব থাকায় নিজেকে সবার কাছ থেকে বিছিন্ন রাখতে গাছের মাচায় থাকছেন।
আশেপাশের অন্য গ্রামগুলোতে করোনা সংক্রমিত রোগীদের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনও আইসোলেশন সেন্টার আছে কি না তা জানা নেই শিবার। তিনি আরও জানান, করোনা সম্পর্কে গ্রামের অনেকেই এখনও সচেতন না।
সূত্র: কলকাতা ২৪
সাননিউজ/এএসএম