আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে দীর্ঘ কর্মঘণ্টার কারণে। কোভিড মহামারির কারণে এমন পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে শঙ্কা গবেষকদের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার কারণে প্রাণহানির বিষয়টি নিয়ে এটিই প্রথম কোনো গবেষণা। যৌথভাবে গবেষণাটি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। সোমবার গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে।
গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, কর্মস্থলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অতিরিক্ত কাজ করার কারণে রক্তক্ষরণজনিত রোগ ও হৃদরোগে ভুগে ২০১৬ সালে বিশ্বজুড়ে ৭ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। একই কারণে ২০০০ সালের তুলনায় মৃত্যুর এই হার বেড়েছে ৩০ শতাংশ।
ডব্লিউএইচওর পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক মারিয়া নাইরা বলেন যে, সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় কাজ করলে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে আমরা কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত ও এ নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া আহ্বান জানাচ্ছি।’
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, অতিরিক্ত সময় কর্মস্থলে কাজ করার কারণে যারা প্রাণ হারাচ্ছেন তাদের ৭২ শতাংশ পুরুষকর্মী। এদের মধ্যে বেশিরভাগ আবার মাঝবয়সী কিংবা প্রবীণ। এতে মৃত্যু হয় সাধারণত জীবনের শেষপ্রান্তে, কখনও কখনও কয়েক দশক পরেও।
গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার কারণে মৃত্যুঝুঁকি সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়া ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে। ডব্লিউএইচও বিভাজিত এই দুই অঞ্চলের মধ্যে চীন, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশগুলোও রয়েছে।
বিশ্বের ১৯৪টি দেশের তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে করা গবেষণায় বলা হচ্ছে, কর্মস্থলে সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজের তুলনায় ৫৫ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করার ফলে স্ট্রোক করার ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে ১৭ শতাংশ।
২০০০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সময়কালে গবেষণাটি করায় কোভিড মহামারি তাতে অন্তর্ভূক্ত হয়নি। কিন্তু ডব্লিউএইচও’র কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে দূরে থেকে অফিসের কাজ করা ও বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার কারণে এই ঝুঁকি হয়তো বেড়ে গেছে।
সাননিউজ/এএসএম