আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের এক চিকিৎসক ফেসবুক লাইভে এসে অঝোরে কেঁদেছেন। তার এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতের সংবাদমাধ্যম।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বক্ষ ও মেডিসিন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ডা. অনির্বাণ বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে বর্ধমান শহরে নিজের চেম্বারে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন।
করোনার সময়ের শুরু থেকেই তিনি বারবার তার ফেসবুক পেজে সতর্কবার্তা দিয়ে আসছেন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ তাকেও টলিয়ে দিয়েছে। একমাত্র কন্যা আর স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার। সব ভুলে এখনও দিনে ৮-৯ ঘণ্টা পিপিই পরে, মুখে মাস্ক লাগিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করছেন।
তিনি তার ফেসবুকে একটি সতর্ক বার্তা দিতে গিয়ে অঝোরে কেঁদেছেন। কারণ, তিনি বুঝতে পেরেছেন এবারে করোনা ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে। একজন চিকিৎসক হয়ে মানুষকে না বাঁচাতে পারার যে কতটা যন্ত্রণা, তা ধরা পড়েছে তার আকুতিতে। ফেসবুকে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতে গিয়ে শিশুর মতো অঝোরে কেঁদেছেন তিনি।
ওই চিকিৎসক বলছেন, ‘বেড নেই। অক্সিজেন নেই। রোগীরা হাঁপাচ্ছে। এ দৃশ্য চোখে দেখা যাচ্ছে না। অনেককে হাসপাতালে যেতে বলে বাড়ি চলে এসেছি। তাদের যে কী হবে জানা নেই।’
বাসিন্দাদের সচেতন করতে ফেসবুকে এসে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে হাতজোড় করে তার অনুরোধ, ‘করোনায় আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।’ তার উপলব্ধি, ‘সাত-আট দিন পরে এলে চিকিৎসকের আর বিশেষ কিছু করার থাকছে না।’
তার এই ভিডিও ভাইরাল হয়ে এখন নেটিজেনদের ফোনে ফোনে ঘুরছে। বিশিষ্ট চিকিৎসককে হাউ হাউ করে কাঁদতে দেখে পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ তা অনুভব করছেন অনেকেই।
কাঁদতে কাঁদতেও হাত জোড় করে অনির্বাণ বিশ্বাস বলছেন, ‘অনেকেই আসছেন অনেক দেরি করে। বাড়িতে সাত থেকে দশদিন নিজেরাই ডাক্তারি করার পরে ডাক্তারবাবুর কাছে আসছেন। এটা করবেন না।
শরীর খারাপ হওয়া মাত্রই চিকিৎসকের কাছে আসুন। আমরা একবার চেষ্টা অন্তত করতে পারি। খুব ভয়াবহ সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। মাস্ক পরুন। নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলতেই হবে। স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।’
ডা. অনির্বাণ বিশ্বাস বলেন, ‘হাসপাতালে হুট করে ১০০ থেকে দশ হাজার বেড করে দেওয়া সম্ভব নয়। অনেক পরিকাঠামো প্রয়োজন। আপনারা সচেতন না হলে আরও বিপদ বাড়বে। চোখের সামনে একজন চিকিৎসক হয়ে মানুষের চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছি না। খুব কষ্ট হচ্ছে।’
সাননিউজ/এএসএম