আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজার ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল হামাস এবং ইসরায়েলেরর সামরিক বাহিনীর পাল্টাপাল্টি প্রাণঘাতী বিমান, রকেট ও বোমা হামলার মাঝে ইসরায়েলজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে।
ইসরায়েলে বসবাসরত আরব; যারা ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত, তাদের সঙ্গে ইসরায়েলি ইহুদিদের দাঙ্গা ও সহিংস সংঘাত বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়ায় এর নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, বুধবার রাতে জাফার দক্ষিণের বাত ইয়াম শহরে একদল উত্তেজিত ডানপন্থী ইহুদি একজন আরব গাড়িচালককে তার গাড়ির ভেতর থেকে বাইরে এনে মারধর করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে।
পুলিশ বলছে, আরব ওই গাড়িচালেকে গাড়ি থেকে টেনে হেঁচড়ে বের করে আনার পর মারধর করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, প্রায় ২০ জনের একটি ইহুদি দল ওই ব্যক্তিকে ধাতব বস্তু দিয়ে মারপিট এবং মাথায় উপর্যপুরি লাথি মারছেন। ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাইফার উত্তরের আকর শহরে একদল উত্তেজিত আরব একজন ইহুদি ব্যক্তিকে ঘিরে ধরে মারধর করেন। ওই ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, উত্তেজিত লোকজন পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় অনেকেই পুলিশকে লক্ষ্য করে লোহার পাত ও পাথর নিক্ষেপ করেন।
ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, আরব-ইসরায়েলি এই সংঘাত গ্রহণযোগ্য নয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন নেতানিয়াহু। এর পরপরই ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি ও বর্ডার পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেছেন, আরবদের হাতে ইহুদি এবং ইহুদিদের হাতে আরবদের মারধর কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না। ইসরায়েলি নাগরিকদের আমি বলতে চাই, আপনাদের রক্ত টগবগ করছে কি-না আমি সেটার পরোয়া করি না। কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না।
নেতানিয়াহু বলেন, আপনি (ইসরায়েলি ইহুদি) সাধারণ একজন আরবকে ধরে মারধরের চেষ্টা করতে পারেন না। একইভাবে আমরা আরব নাগরিকদের হাতে ইহুদিদের মারধরের দৃশ্যও দেখতে পারি না।
গত সোমবার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে শুরু হওয়া সহিংসতা এখনও অব্যাহত আছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত ৮৩ জন নিহত ও আরো তিন শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
গাজার ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল হামাস জবাবে ইসরায়েলে বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার রকেট বর্ষণ করেছে। এতে এক সৈন্যসহ ছয় ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন।
সাননিউজ/এএসএম