আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দিল্লির একটি হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে একসঙ্গে আট রোগী মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক চিকিৎসকও।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবর অনুসারে, অক্সিজেন ঘাটতি নিয়ে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অভিযোগ করে আসছিল দিল্লির বাত্রা হাসপাতাল। এ নিয়ে গত ১১ দিন ধরে হাইকোর্টে শুনানিও চলছে। কিন্তু তারপরেও হাসপাতালে চাহিদামতো অক্সিজেন পৌঁছায়নি।
শনিবার (১ মে) এ অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে সেখানে একে একে আট রোগী মারা যান। তারও অন্তত ঘণ্টাখানেক পর অক্সিজেনের ট্যাঙ্কার গিয়ে পৌঁছায় হাসপাতালটিতে।
জানা যায়, অক্সিজেন সংকটের অভিযোগ নিয়ে শনিবার দুপুরে ফের দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বাত্রা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখানে তারা জানান, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে হাসপাতালে অক্সিজেন পুরোপুরি ফুরিয়ে যায়।
তবে অক্সিজেনের ট্যাঙ্কার পৌঁছায় দুপুর দেড়টার দিকে। অর্থাৎ, অন্তত ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট বিনা অক্সিজেনে পড়েছিলেন হাসপাতালের ২৩০ জন রোগী।
আদালতে তখনো প্রাণহানির বিষয়টি বলেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই আদালত বলেন, ‘আশা করি কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।’ এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, ‘আটজন মারা গেছেন। নিজেদের এক চিকিৎসককেও হারিয়েছি আমরা।’ তাদের এই জবাব শুনে মুহূর্তেই স্তব্ধতা নেমে আসে আদালত কক্ষে।
এ ঘটনায় ভারতের রাজধানী শহরে চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে। কারণ প্রাণহানির শঙ্কা জানিয়ে শনিবার সকালেই অনলাইনে অক্সিজেন চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন বাত্রা হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক সুধাংশু বাঙ্কাতা।
তিনি বলেছিলেন, ‘এইমাত্র অক্সিজেন ফুরিয়ে গেল। কয়েকটি সিলিন্ডার রয়েছে। তাতে আর ১০ মিনিট যাবে। এরপর কী হবে জানি না। পরিস্থিতি খুব খারাপ। দিল্লি সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু ট্যাঙ্কার পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে।’
তারও আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছিল, স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে হাসপাতালে জরুরি পরিস্থিতি চলছে। সেখানে ৩০৭ জন রোগীর মধ্যে ২৩০ জনকে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার অক্সিজেন সংকট দেখা দিল দিল্লির বাত্রা হাসপাতালে। এর আগে, গত ২৪ এপ্রিল সেখানে অক্সিজেন ফুরিয়ে গিয়েছিল। তবে সেবার মারাত্মক কিছু ঘটার আগেই ট্যাঙ্কার গিয়ে পৌঁছায়।
তবে অতটা ভাগ্যবান নয় একই শহরের জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতাল। সেখানে গত এক সপ্তাহে অক্সিজেনের অভাবে অন্তত ২৫ জন রোগী মারা গেছেন।
সাননিউজ/এএসএম