আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মৃত মায়ের পাশেই দুই দিন পড়ে ছিল ১৮ মাসের অভুক্ত শিশু। অথচ তার মায়ের করোনায় মৃত্যু হয়েছে সন্দেহে শিশুটিকে উদ্ধারে ছুটে আসেননি কোনো প্রতিবেশী।
অবশেষে পুলিশ এসে কোলে তুলে নেয় শিশুটিকে। ভারতের মহারাষ্ট্রের পুণেতে হৃদয়বিদারক এই ঘটনা ঘটেছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত নারী পুণের পিমরি চিঞ্চবাড় এলাকার বাসিন্দা। সোমবার (২৬ এপ্রিল) তার ঘর থেকে দুর্গন্ধ বার হতে শুরু কলে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ওই মহিলার দেহ নিয়ে যায়। ঘটনার সময় মহিলার তার শিশুসন্তানকে নিয়ে একাই ছিলেন। তার স্বামী উত্তরপ্রদেশের কাজের খোঁজে গিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, গত শনিবার ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক সময় জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি তিনি আদৌ করোনা পজিটিভ ছিলেন কিনা তাও বোঝা যাবে।
তবে করোনা সংক্রমণের ভয়ে প্রতিবেশিদের কেউ ওই শিশুটিকে কোলে নিতে চায়নি। তাকে কোলে তুলে নিয়েছেন সুশীলা গোভলে এবং রেখা ওয়াজে নামের দুই নারী কনস্টেবল।
শিশুটিকে কোলে নিতে ভয় করেনি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সুশীলা গোভলে বলেন, ‘আমারও দুটি সন্তান রয়েছে। একজন ৮ আর অন্যজন ৬ বছরের। বাচ্চাটাকে দেখে মনে হলো যেন আমার নিজের। বাচ্চাটার এত খিদে পেয়েছিল যে চটপট দুধ খেয়ে নিয়েছে।’
সুশীলার সহকর্মী রেখা জানান, ওই নারীর করোনায় মৃ্ত্যুর সন্দেহ করা হলেও আশ্চর্যজনকভাবে তার বাচ্চাটি প্রায় সুস্থই রয়েছে। তবে সামান্য জ্বর থাকায় সরকারি হাসপাতালে বাচ্চাটির করোনা টেস্ট করানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাচ্চাটিকে ডাক্তার দেখানোর সময় একটু জ্বর ছিল। ডাক্তার ওকে ভাল করে খাওয়াতে বলেছেন। আমরা পানি আর বিস্কুট খাওয়ানোর পর বাচ্চাটি ভালই রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে নিয়ে করোনাও টেস্টও করিয়েছি।’
পুণে পুলিশের অপরাধ দমন শাখার ইনস্পেক্টর প্রকাশ যাদব জানিয়েছেন, বাচ্চাটির রিপোর্টে করোনা ধরা পড়েনি। আপাতত সরকার তার দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে।
সাননিউজ/এএসএম