আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দিন যত গড়াচ্ছে, করোনায় ভারতের করোনার দৈনিক সংক্রমণচিত্রও ততো গুরুতর রূপ নিচ্ছে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির দৃশ্যমান কোনো উন্নতি না হওয়ায় লকডাউনের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়েছে দিল্লি রাজ্য সরকার।
রোববার (২৫ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে কেজরিওয়াল বলেন, ‘এর আগে দিল্লিতে এক সপ্তাহের লকডাউন জারি করা হয়েছিল; করোনার সর্বনাশা ঝড় তাতে থামেনি। জনগণের অভিমত হচ্ছে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এ কারণে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত এই লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হলো।’
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দিল্লিতে লকডাউন চলবে আগামী ৩ মে পর্যন্ত। লাগামহীন করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে এর আগে গত ১৯ এপ্রিল দিল্লিতে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন জারি করেছিল রাজ্য সরকার। সোমবার (২৬ এপ্রিল) ভোর ৫ টায় তা শেষ হওয়ার কথা ছিল।
রোববারের সংবাদ সম্মেলনে কেজরিওয়াল বলেন, বর্তমানে রাজ্যে করোনা শনাক্তের হার ৩৬ শতাংশের বেশি; এর আগে কখনও শনাক্তের এমন উচ্চহার দেখা যায়নি। এরমধ্যে গত বৃহস্পতিবার দিল্লিতে করোনা শনাক্তের হার ছিল ৩৬ দশমিক ২৪ শতাংশ, যা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
গত বৃহস্পতিবার যদিও করোনা শনাক্তের হার কিছুটা কম ছিল (৩২ দশমিক ২৪ শতাংশ) তবে সেদিন সেখানে মারা গেছেন ৩৫৭ জন করোনা রোগী; যা এ পর্যন্ত একদিনে দিল্লিতে করোনা রোগী মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড।
গত এক সপ্তাহের লকডাউনে অবশ্য আক্রান্তের সংখ্যাও কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহের যেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৭ হাজারের ওপরে, সেখানে শনিবার করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২৪ হাজারের কিছু বেশি।
তবে তাতে রাজ্যের সংক্রমণ পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। কারণ একে তো হাসপাতলগুলোতে রোগী আসার বিরাম নেই, তার ওপর গত কয়েকদিন ধরে মেডিকেল অক্সিজেনের তীব্র সংকট চলছে দিল্লির হাসপাতলগুলোতে। এ কারণে অনেক হাসপাতাল ইতোমধ্যে নতুন রোগী ভর্তি করা বন্ধ করে দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি স্বীকার করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু হাসপাতালে প্রয়োজন অনুযায়ী অক্সিজেন সরবরাহ করা যাচ্ছে না, এটা ঠিক; তবে আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করেছি।’
‘মূল সমস্যা হলো, রাজ্যে অক্সিজেনের চাহিদা প্রতিদিনই বাড়ছে। বর্তমানে দিল্লির হাসপাতালগুলোতে দৈনিক অক্সিজেনের চাহিদা ৭০০ মেট্রিক টন, কিন্তু কেন্দ্র থেকে আমরা সরবরাহ পাচ্ছি মাত্র ৩৩০ থেকে ৩৩৫ মেট্রিক টনের মতো অক্সিজেন।
এই সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে জানিয়ে কেজরিওয়াল বলেন, ‘অক্সিজেন সরবরাহের অনুরোধ জানিয়ে সবগুলো রাজ্যের সরকার বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি রাজ্যের সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগও হয়েছে। ইতিবাচক কোনো অগ্রগতি হলে অবশ্যই তা আমি আপনাদের জানাব।’
সূত্র: এনডিটিভি
সাননিউজ/এএসএম