আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের রাজধানী দিল্লিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের চরম সঙ্কটে নাভিশ্বাস উঠছে। অক্সিজেনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এ বার সমস্ত রাজ্যের কাছে সাহায্যের আর্জি জানালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
ইতোমধ্যে ভারতের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে চিঠি লিখেছেন তিনি। সেখানে আর্জি জানিয়েছেন, অতিরিক্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকলে তা যেন দিল্লিতে পাঠানো হয়।
চিঠি লেখার এ তথ্য জানিয়েছেন কেজরিওয়াল নিজেই। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে তিনি লেখেন, ‘আমি দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের অনুরোধ করে চিঠি লিখেছি, তাদের রাজ্যে বাড়তি অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে থাকলে সেগুলো যেন দিল্লিতে পাঠানো হয়।
‘যদিও কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের সহযোগিতা করছে, তবে এখানে করোনার ভয়াবহতা এত বেশি যে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা সত্ত্বেও রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারছি না।’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঝাপটায় ভারতজুড়েই নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। স্বাভাবিক ভাবেই মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যের মতো দিল্লিতেও করোনা রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের চাহিদা এখন আকাশছোঁয়া।
তবে দিল্লিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা উত্তোরত্তর বাড়তে থাকায় সেখানকার করোনা রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন যে শনিবার দিল্লির জিটিবি এবং রাজীব গান্ধী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে করোনা রোগীদের বেড অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছে।
দিল্লিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেজরিওয়াল। কেন্দ্রীয় সরকারও দিল্লিকে কোটার তুলনায় অতিরিক্ত অক্সিজেন সিলিন্ডারের জোগান দিয়েছে। সে কথা উল্লেখ করে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কেজরিওয়াল বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যদিও আমাদের সাহায্য করছে, তা সত্ত্বেও রাজধানীর করোনা পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে সমস্ত উপলব্ধ অক্সিজেনও অপ্রতুল মনে হচ্ছে।’
ভারতের যে কয়েকটি রাজ্যে লাগামহীনভাবে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুহার, সেগুলোর মধ্যে বর্তমানে দ্বিতীয় শীর্ষস্থানে আছে দিল্লি।
শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৩৩১ জন। পাশাপাশি, এই সময়ের মধ্যে রাজধানীতে ৩৪৮ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
দিল্লিতে অক্সিজেন উৎপাদনকারী কোনও কারখানা না থাকাতেও পরিস্থিতি আরও সংকটপূর্ণ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কেজরিওয়াল। মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে চিঠিতে তার কাতর আর্জি, ‘এ অবস্থায় যে ভাবে হোক, দয়া করে সাহায্য করুন।’
সাননিউজ/এএসএম