আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারত করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় রীতিমতো বিধ্বস্ত। জোরগতিতে টিকাদান কর্মসূচি চালানোর পরও প্রতিদিন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
তবে ‘কার্যকর ভাবে’ করোনা মোকাবিলা করতে এখন ভারতকে যেন চোরদের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হবে! কারণ দেশটিতে ফের হাসপাতাল থেকে করোনা টিকা চুরির অভিযোগ উঠেছে। সেটাও আবার দিল্লির পার্শ্ববর্তী রাজ্য হরিয়ানা থেকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, করোনা মহামারিতে ভারতের বিপর্যস্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে হরিয়ানা অন্যতম। কিন্তু এরপরও রাজ্যটির বিরুদ্ধে টিকা নষ্টের অভিযোগ উঠেছিল। এবার তার দোসর হলো চুরি। রাজ্যটির ঝিন্দ জেলার সরকারি হাসপাতালের স্টোর থেকে করোনা টিকার ১ হাজার ৭১০টি ডোজ চুরি হয়ে গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ওই হাসপাতালের স্টোরে করোনার টিকা ছাড়াও আরও অনেক ওষুধ ছিল। কিন্তু কেবল টিকার ডোজগুলোই চুরি হয়েছে। বাকি অন্য কোনো ওষুধে হাতই দেয়নি চোর।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, চুরি হয়ে যাওয়া করোনা টিকার মধ্যে ১ হাজার ২৭০টি কোভিশিল্ডের এবং ৪৪০টি কোভ্যাক্সিনের টিকার ডোজ। এ ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন তারা। শুরু হয়েছে তদন্তও। তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, করোনা টিকা সংরক্ষণ করে রাখা ঘরটিতে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। এমনকি টিকা বা স্টোরের নিরাপত্তায় ঘরের বাইরে কোনো নিরাপত্তাকর্মীও ছিলেন না।
অবশ্য ভারতে ওষুধ চুরির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। কিছুদিন আগে রাজস্থানে ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভিড-১৯ টিকা কোভ্যাক্সিনের ৩২০টি ডোজ চুরি হয়ে যায়। জয়পুরের শান্তিনগরে কানওয়াতি হাসপাতালের ভ্যাকসিন সেন্টার থেকে হিমাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল টিকাগুলো। মাঝপথে টিকার ৩২টি সিসি চুরি হয়ে যায়। প্রতিটি সিসিতে টিকার ১০টি ডোজ থাকে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে টিকার ৩২০টি ডোজ চুরি হয়।
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি থেকে পুরো ভারতজুড়ে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়। এর ঠিক তিন মাসের মাথায় এসে দেশটির অনেক রাজ্য টিকার স্বল্পতার কথা জানিয়ে সরব হয়েছে। তবে মানুষকে টিকা দেওয়ার পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক ডোজ ভ্যাকসিন নষ্টের অভিযোগও সামনে উঠে এসেছে।
যার একটা বড় অংশ নষ্ট হয়েছে দেশটির পাঁচটি রাজ্যে— তামিলনাড়ু, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, মণিপুর এবং তেলাঙ্গানা। প্রতিষেধক নষ্টের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে হরিয়ানা।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, গত ৩ মাসে ৪৪ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা নষ্ট হয়েছে। মোদি সরকার এর দায়ও দিয়েছে মূলত ওই পাঁচটি রাজ্যকে।
টিকা নষ্ট করার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে তামিলনাড়ু। কেন্দ্র থেকে পাওয়া মোট টিকার ১২ শতাংশ ডোজ নষ্ট করেছে এই রাজ্য। এরপরই যথাক্রমে হরিয়ানা ৯ দশমিক ৭৪, পাঞ্জাব ৮ দশমিক ১২, মণিপুর ৭ দশমিক ৮ এবং তেলঙ্গানা ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ নষ্ট করেছে।
সাননিউজ/এএসএম