আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারত। প্রায় প্রতিদিনই সেখানে চলছে আক্রান্ত-মৃত্যুর রেকর্ড ভাঙার ভয়ঙ্কর খেলা।
এমন পরিস্থিতিতে গত মাসের শেষদিকে বিদেশে করোনার টিকা রফতানি স্থগিত করে ভারতীয় সরকার। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। তবে তাতে থোড়াই কেয়ার ভারতের। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনেওয়ালা।
বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, টিকা রফতানির কোনও নিশ্চয়তা নেই এবং এই মুহূর্তে আমরাও মনে করছি, এমন সংক্রমণের সময়ে আগামী দুই মাসের মধ্যে আমাদের রফতানির দিকে তাকানো উচিত হবে না।
সিরাম সিইও বলেন, হতে পারে জুন-জুলাইয়ে আমরা আবারও সামান্য পরিমাণে টিকা রফতানি শুরু করতে পারি। তবে এই মুহূর্তে আমরা দেশকেই অগ্রাধিকার দেব।
ভারতে আগামী ১ মে থেকে নতুন ধাপে শুরু হচ্ছে করোনারোধী টিকাদান কার্যক্রম। এ পর্যায়ে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাইকেই টিকা দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে প্রতি মাসে দেশটির আরও ২০ লাখ ডোজ বেশি প্রয়োজন পড়বে। তবে সিরামের জন্য সেই চাহিদা পূরণ বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রথমত, টিকা উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ভারত সরকারের কাছে তিন হাজার কোটি রুপি চেয়েছিলেন আদর পুনেওয়ালা। সেই অর্থ এখনও তার হাতে পৌঁছায়নি।
এ বিষয়ে সিরাম প্রধান বলেন, আমরা মিডিয়াতে বারবার দেখছি, তিন হাজার কোটি রুপি মঞ্জুর হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এটি শিগগিরই আমাদের হাতে এসে পৌঁছাবে। তবে আমরা এই অর্থের জন্য অপেক্ষা করিনি, উৎপাদন বাড়াতে ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করেছি। আশা করছি, এই সপ্তাহেই সরকার থেকে আমাদের কাছে ওই অর্থ পৌঁছাবে।
সিরামের সামনে বড় আরেকটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে টিকার কাঁচামাল রফতানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা। চলতি সপ্তাহে আদর পুনেওয়ালা টুইটের মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও ঠিকঠাক সাড়া মেলেনি।
সিরাম প্রধান বলেন, মার্কিন প্রশাসন মিডিয়ার মাধ্যমে সাড়া দিয়েছে। আমরা খবরে তাদের বলতে দেখেছি, তারা বিষয়টিতে অবগত এবং পরিস্থিতি বুঝতে পারছেন। তারা বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু এখনও কাঁচামাল রফতানি চালু হয়নি।
তিনি জানান, এর কারণে ভারতে কোভিশিল্ডের উৎপাদন বা দামে কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে কোভোভ্যাক্সের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এটি ভারতের বাজারে ছাড়ার কথা রয়েছে।
আদর পুনেওয়ালা বলেন, এটি আমাদের দামের ওপর প্রভাব ফেলবে না। কারণ আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প সরবরাহকারী খুঁজে নিতে পারব। এতে শুধু একটু বেশি সময় লাগবে এই যা। তাতে কোভোভ্যাক্স মজুতে বাধা পড়তে পারে, সৌভাগ্যবশত কোভিশিল্ডে নয়।
সান নিউজ/আরআই