আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের পাশাপাশি বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে প্রথম ১১ জানুয়ারি মৃত্যুর ঘোষণা দেয় চীন। কয়েক মাসেই বিশ্বে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় ভয়াবহ রূপ নেয় ভাইরাসটি। দেখা যায় প্রথম মৃত্যুর পর ৫০ হাজার ছাড়াতে সময় লেগেছে ৮২ দিন। যা কিনা এখন ছাড়ালো মাত্র এক সপ্তাহেই।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য মতে, বিশ্বের ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ২২ লাখ ছাড়িয়েছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। একই সময়ে এই ভাইরাসে মারা গেছে দেড় লাখের বেশি মানুষ (রাত ২টা পর্যন্ত ১,৫১,০০৬ জন)।
করোনাভাইরাসে মৃত্যুর তথ্য বলছে, ১১ জানুয়ারি প্রথম মৃত্যুর পর ২ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয় ৫০ হাজার মানুষের। এতে দেখা যায়, প্রথম মৃত্যুর পর ৫০ হাজার ছাড়াতে সময় লেগেছে ৮২ দিন। এরপর ১০ এপ্রিল এটি ছাড়িয়ে যায় ১ লাখ। এর পরের ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে সময় লেগেছে মাত্র ৮ দিন। আর ১৭ এপ্রিল এসে ১ লাখ ৫১ হাজার ৬ জন। এক দিন কমে পরের সাত দিনেই মারা গেছে আরও ৫০ হাজার মানুষ। মাত্র এক সপ্তাহে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো ৫০ হাজার মানুষ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৮০ শতাংশ মানুষ ইউরোপ–আমেরিকার। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আছে আক্রান্তের প্রায় ৩১ শতাংশ মানুষ। মৃত্যুর দিকে থেকে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে ৭টি ইউরোপের। আর বাকি দুটি দেশ এশিয়ার। শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে ইতালিতে ২২ হাজার ৭৪৫, স্পেনে ১৯ হাজার ৬১৩, ফ্রান্সে ১৮ হাজার ৮৬১, যুক্তরাজ্যে ১৪ হাজার ৫৭৬, বেলজিয়ামে ৫ হাজার ১৬৩, ইরানে ৪ হাজার ৯৫৮, চীনে ৪ হাজার ১৯৩, জার্মানিতে ৪ হাজার ১৯৩ ও নেদারল্যান্ডসে মারা গেছে ৩ হাজার ৪৫৯ জন। এর মধ্যে চীন নতুন করে মৃত্যুর তথ্য সংশোধন করেছে। এতে আগের চেয়ে ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। এরপরও চীনের অবস্থান অষ্টম।
দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ দেশগুলো করোনা প্রতিরোধের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে কিছুটা দেরি করায় পড়েছে বিপাকে। এ কারণে পাকিস্তান, ভারত, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে বেশি হারে সংক্রমিত হচ্ছে মানুষ। এখন পর্যন্ত ভারতে ৪৫২ জন, পাকিস্তানে ১৩৫ জন, আফগানিস্তানে ৩০ জন ও বাংলাদেশে ৭৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আর শ্রীলঙ্কায় মারা গেছে ৭ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি মৃত্যু হচ্ছে বাংলাদেশে।
অবশ্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশ নেপাল ও ভুটান করোনা শনাক্তের শুরুতেই লকডাউন ঘোষণা করায় পেয়েছে সুফল। একটু দেরিতে হলেও লকডাউন ঘোষণা করে অনেকটা প্রতিরোধ করেছে মালদ্বীপও। এ তিনটি দেশে এখনো করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি।
সান নিউজ/আরএইচ