আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে করোনা পরিস্থিতি আবারও বেশ খারাপ স্থানে চলে গেছে। দেশটিতে একদিনে করোনা সংক্রমণের রেকর্ড ভেঙেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মারা যাচ্ছেন শয়ে শয়ে মানুষ।
লাগামহীন করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কারফিউ ঘোষণার পর এবার লকডাউন জারি করেছে দিল্লি রাজ্য সরকার।
সোমবার ১৯ এপ্রিল) দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক ভাষণে এই ঘোষণা দেন।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এই সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাত ১০ টা থেকে সামনের সোমবার (২৬ এপ্রিল) ভোর ৫ টা পর্যন্ত লকডাউনে থাকবে দিল্লি। এই সময়সীমার মধ্যে সরকারী ও জরুরি সেবা প্রদানকারী সব দফতর খোলা থাকবে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের আগামী সাত দিন বাড়িতে থেকে দাফতরিক কাজ করতে হবে। মুদি দোকান, খাবার ও ওষুধের দোকান, পত্রিকার হকারদের লকডাউনের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। ব্যাংক, এটিএম, বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোও লকডাউনের মধ্যে চালু থাকবে। পাশাপাশি চালু থাকবে হোম ডেলিভারি সেবাও।
সোমবারের ঘোষণায় অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘যদি এখনই লকডাউন জারি করা না হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের অনেক বড় দুর্যোগের মুখে পড়তে হবে। সরকার সবসময়ই আপনাদের পাশে আছে। নিতান্ত বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা সেবা দিতে এই লকডাউন কার্যকর ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে দিল্লির বাসিন্দাদের উদ্দেশে কেজরিওয়াল বলেন, ‘আমরা আপনাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছি না…আমি এও বলছি না যে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।’
‘তবে সংকট যে চলছে— এটা সত্য। যে কোনো ব্যাবস্থারই একটা সীমা থাকে এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটি প্রায় অতিক্রম হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছেছি আমরা।’
ভারতে করোনায় শীর্ষ বিপর্যস্ত শহরগুলোর একটি নয়াদিল্লি। সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো বড় আকারে প্রকোপ শুরুর পর নয়াদিল্লির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শোচনীয় পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কিছুদিন আগেই সেখানে বিধিনিষেধসহ সপ্তাহান্তে কারফিউ জারি করেছিল রাজ্য সরকার।
রোববার দিল্লিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৪৬২ জন, মারা গেছেন ১৬৭ জন। সেখানকার স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, সম্প্রতি দিল্লিতে করোনায় আক্রান্তের হার বেড়েছে ৩০ শতাংশ। করোনা টেস্ট করাতে আসা প্রতি তিন জনে একজন ‘পজিটিভ’ শনাক্ত হচ্ছেন।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে যে খুব শিগগিরই লকডাউন আরোপ করা হবে দিল্লিতে, তার আঁচ রোববারই (১৮ এপ্রিল) পাওয়া গিয়েছিল।
দিল্লির শীর্ষস্থানীয় এক চিকিৎসক ডা. আমব্রিশ মিথাল রয়টার্সকে রোববার বলেছিলেন, ‘দিল্লিকে এক থেকে দুই সপ্তাহ লকডাউন করে রাখা ছাড়া এখন আর কোনো উপায় নেই। সপ্তাহে একদিন কারফিউ দিয়ে কিছু হবে না। বর্তমানে এখানকার করোনা পরিস্থিতি অকল্পনীয়।
সূত্র: এনডিটিভি
সাননিউজ/এএসএম