আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে করোনা পরিস্থিতি আবারও বেশ খারাপ স্থানে চলে গেছে। দেশটিতে একদিনে করোনা সংক্রমণের রেকর্ড ভেঙেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মারা যাচ্ছেন শয়ে শয়ে মানুষ। গত প্রায় এক মাস ধরে ভারতে লাগামহীনভাবে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এ রোগে মৃত্যুর হার।
সম্প্রতি ভারতের যে কয়েকটি অঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লি ও রাজধানী নয়াদিল্লি।
বিশেষ করে রাজধানী নয়াদিল্লিতে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা এত বেশিমাত্রায় দেখা যাচ্ছে যে, সেখানকার গোরস্তানে স্থানাভাব দেখা দিয়েছে। জায়গার অভাবে কবরস্থ না করতে না পেরে মরদেহ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে গোরস্তান কর্তৃপক্ষ।
দিল্লির সীমান্তের কাছে একটি বিশাল পতিত জমি ছিল। ২০২০ সালে এটিকে করোনায় মৃত মুসলিম রোগীদের গোরস্তানে রূপান্তরিত করে দিল্লির রাজ্য সরকার। গোরস্তানটির নাম দেওয়া হয় ‘জাবিদ কবরস্থান’।
জাবিদ কবরস্থানে গেলে এখন দেখা যায়, বিশাল জায়গা জুড়ে শুধু সারি সারি কবর। ফাঁকা জায়গা খুব অল্প অবশিষ্ট আছে সেই গোরস্তানে।
জাবিদ কবরস্থানের প্রধান গোরখোদক মোহাম্মদ শামীম রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের গোরস্তানে এখন জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে প্রতিদিন যেসব মরদেহ আসছে তার সবগুলো কবরস্থ করা যাচ্ছে না। গতকাল ১৯ টি মরদেহ এসেছিল। আমরা ১৫ টি কবরস্থ করতে পেরেছি।’
শনিবার দেখা গেছে, বেশ কিছু পরিবার সস্তা প্লাইউডের কফিন কিংবা স্রেফ সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় তাদের মৃত আত্মীদের মরদেহ গোরস্তানে নিয়ে এসেছেন সৎকারের উদ্দেশ্যে। তাদেরই একজন মেহবুব। নিজের ভাতিজা পাপ্পু আলিকে (৪৩) দাফন করতে এসেছেন তিনি।
মেহবুব জানান, করোনায় গুরুতর আক্রান্ত অবস্থায় পাপ্পু আলিকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরেছেন তারা। অবশেষে অনেক কষ্টে সরকারি একটি হাসপাতালে পাপ্পুর জন্য শয্যার ব্যবস্থা করতে পেরেছিলেন। সেই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তার।
রয়টার্সকে মেহবুব বলেন, ‘হাসপাতালে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ডাক্তার ছিলো না। আমরা এমনকি মৃত্যুর আগে তাকে (পাপ্পু) পানিও খাওয়াতে পারিনি।’
সূত্র: রয়টার্স
সাননিউজ/এএসএম