আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদি আরবের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরক-বোঝাই ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি । তবে সৌদি আরবের আকাশে এসব ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন আটকে দেওয়ার পর ধ্বংস করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী।
এ সময় ইয়েমেন সীমান্ত সংলগ্ন সৌদির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগুন ধরে যায় বলে খবর দিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপি।
ইয়েমেনে লড়াইরত সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার ভোরের দিকে সৌদি আরবের জিজান প্রদেশে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমাবাহী ড্রোন হামলা হয়েছে। সৌদি আরবের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আটকে দেওয়ার পর ধ্বংস করা হয়।
সে সময় ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের কিছু ধ্বংসাবশেষ জিজান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে আগুন ধরে যায়।
তবে হামলা এবং অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় কেউ নিহত হয়নি। এমনকি তাৎক্ষণিকভাবে কারো আহত হওয়ার তথ্যও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিবৃতিতে এই হামলার জন্য ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে দায়ী করে বলা হয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমাবোঝাই ড্রোনের মাধ্যমে বেসামরিক স্থাপনা বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথির শক্তিশালী ঘাঁটি সাদা থেকে এই হামলা হয়েছে।
সৌদি আরব লক্ষ্য প্রায়ই একই ধরনের হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীরা। গত সোমবারও সৌদি আরবের দু’টি তেল স্থাপনা-সহ বিভিন্ন স্থান লক্ষ্য করে দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্তত ১৭টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে ইয়েমেনের এই বিদ্রোহীগোষ্ঠী।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সৌদি আরবের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১৫ মার্চ সৌদির দক্ষিণাঞ্চলের একটি বিমানবন্দর এবং একটি সামরিক ঘাঁটিতে সশস্ত্র ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করে বিদ্রোহীগোষ্ঠী হুথি।
পরে গত ২৩ মার্চ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় আভা বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালায় এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে রিয়াদের নতুন শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাব দেওয়ার পরদিন ইরান সমর্থিত হুথি সৌদিতে হামলার দাবি করে।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।
ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ছায়াযুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধে ইয়েমেনের ২ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং বাস্ত্যুচুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
সূত্র: এপি, রয়টার্স।
সাননিউজ/এএসএম