আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে গুলিতে নিহতের সংখ্যা ৫শ’ ছাড়ানোর পর অভিনব প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
মঙ্গলবার ( ৩০ মার্চ ) আবর্জনা ধর্মঘট নামের কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানী নেপিদো, ইয়াঙ্গুনসহ বিভিন্ন শহরের সড়কে আবর্জনা ছড়িয়ে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এতে অচল হয়ে পড়ে মিয়ানমার।
এদিকে, গণতন্ত্রপন্থিদের হত্যা অব্যাহত রাখায় জান্তার বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। দি আরাকান আর্মিসহ তিনটি গোষ্ঠী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের হুমকি দিয়েছে।
আর সংঘাত কবলিত এলাকা থেকে পালিয়ে থাইল্যান্ডের সীমান্ত আশ্রয় নেওয়াদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয় একটি মানবাধিকার সংস্থা। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।
১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এরপর থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও অসহযোগ আন্দোলন চলছে। এসব বিক্ষোভ দমনের নামে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায় জান্তানিয়ন্ত্রিত নিরাপত্তা বাহিনীতে।
এতে এ পর্যন্ত অন্তত ৫১৪ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে চলমান আন্দোলন আরও জোরালো করতে নতুন নতুন কৌশল নিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। সোমবার লাউড স্পিকারে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয়দের শহরের প্রধান প্রধান সড়কে আবর্জনা ফেলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় আবর্জনা জমা করা হচ্ছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অভিনব আন্দোলনে শহরের রাস্তাগুলোতে ময়লার স্তূপ জমে গেছে। এ কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সড়কগুলোতে।
মিয়ানমার নাউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মান্দালয়সহ বিভিন্ন শহরে সোমবার রাতভর ও মঙ্গলবারের বিক্ষোভে এবং অভিযানের সময় গুলিতে অন্তত ১৯ জন প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছেন। এর আগে সোমবার নিরাপত্তা বাহিনী আন্দোলনকারীদের ওপর গ্রেনেড লঞ্চার দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
তবে, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে যে নিরাপত্তা বাহিনী দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহূত অস্ত্রের মাধ্যমে এক দল উগ্র সন্ত্রাসবাদীদের ছত্রভঙ্গ করেছে।
এদিকে, সেনাশাসকদের বিরোধিতা করা তিনটি সশস্ত্র সংগঠন দ্য মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এ্যালায়েন্স আর্মি, দি আরাকান আর্মি ও টাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এক যৌথ বিবৃতিতে আন্দোলনকারীদের হত্যা বন্ধ করতে জান্তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে গণতন্ত্রপন্থিদের হত্যা বন্ধ না করলে জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের হুমকি দেয় গোষ্ঠীগুলো। মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্ত এলাকায় জান্তা বিমান হামলা চালানোর পর বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ।
সান নিউজ/এসএ