আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলে পর থেকে তাদের দমন-পিড়নে নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে একটি অধিকার সংগঠন।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) শুরু হয়েছে তাদের নতুন এক কর্মসূচি- ‘গার্বেজ স্ট্রাইক’। রক্তাক্ত দিনের পর মিয়ানমার জুড়ে শোক। সোমবার ( ২৯ মার্চ) রাতে প্রদীপ জ্বেলে নিহতদের স্মরণ করেছে।
মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ‘নিশ্চল দাঁড়িয়ে থাকবে না’ গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীরা এ কর্মসূচিতে নাগরিকদের ঘরের আবর্জনা রাস্তার মোড়ে ছুড়ে ফেলে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বলা হচ্ছে।
এ্যাসিস্ট্যান্স এ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স (এএপিপি) নামের একটি সংগঠন বলছে, সোমবারও বিক্ষোভে দমন-পীড়নে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৮জন নিহত হয়েছেন ইয়াংগুনের দাক্ষিণ দাগন এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীরা এলাকায় বালির বস্তা দিয়ে অবরোধ তৈরি করেছিল। নিরাপত্তা বাহিনী তা সরাতে ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছেন, রাতেও সেখানে গোলাগুলির শব্দ পেয়েছেন তারা। সে কারণে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
এ বিষয়ে পুলিশ বা সেনা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে পারেনি রয়টার্স। জাতিসংঘ মহাসচিব এ্যান্তোনিও গুতেরেস প্রতিবাদকারীদের ওপর এই হত্যা-নিপীড়ন বন্ধ করতে মিয়ানমারের জেনারেলদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এএপিপির হিসাবে গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে গত দুই মাসে কমপক্ষে ৫১০ জনের মৃত্যু হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে গত শনিবার, সব মিলিয়ে ১৪১ জন নিহত হয়েছে সেদিন।
মিয়ানমারজুড়ে এই বিক্ষোভের পেছনের অন্যতম সংগঠন জেনারেল স্ট্রাইক কমিটি অব ন্যাশনালিটিস (জিএসসিএন) ফেইসবুকে পোস্ট করা এক খোলা চিঠিতে ‘সেনাশাসনের বিরোধিতাকারী জনগণ, তরুণ, নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের সুরক্ষা’ নিশ্চিত করতে দেশটিতে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন জাতির সশস্ত্র গোষ্ঠীর সহযোগিতা চেয়েছে।
তাদের আহ্বানে সাড়াও মিলছে। তিনটি সশস্ত্র গ্রুপ মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে সামরিক বাহিনীকে হত্যা বন্ধ করে রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে।
মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এ্যালায়েন্স আর্মি, আরাকান আর্মি এবং তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি তাদের যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, সেনাবাহিনী এই আহ্বানে সাড়া না দিলে তারাও মিয়ানমারের সর্বজাতির আত্মরক্ষার ‘বসন্ত বিপ্লবে’ শামিল হবে।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটির বিস্তৃত অংশ দুই ডজন সশস্ত্র গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে; গত কয়েকদিনে এই গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াইয়ের তীব্রতাও বেড়েছে।
সান নিউজ/এসএ