আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বিশ্বব্যাপী রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছে বৈশ্বিক খাদ্যশস্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি)।
সংস্থার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২১-২২ মৌসুমে বিশ্বে খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে ২২৮ কোটি ৭০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। খবর রয়টার্স ও ওয়ার্ল্ড গ্রেইন।
আইজিসির প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়লেও মজুদ বৃদ্ধিতে সেটি খুব বেশি ভূমিকা রাখবে না। কারণ উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদাও সমানভাবে বাড়বে। ফলে খাদ্যশস্য মজুদের ক্ষেত্রে এ মৌসুমে ভারসাম্য বজায় থাকবে। এ কারণে মৌসুম শেষে বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্য মজুদের পরিমাণ দাঁড়াবে ৬০ কোটি ৯০ লাখ টনে, যা গত বছরও একই ছিল।
২০২১-২২ মৌসুমে বিশ্বে খাদ্যশস্য উৎপাদন নিয়ে প্রথম পূর্ণ মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইজিসি। সেখানে বলা হয়েছে, এ মৌসুমে বিশ্বব্যাপী ৭৯ কোটি টন গম উৎপাদন হতে পারে, যেখানে এর আগের মৌসুমে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৭৭ কোটি ৪০ লাখ টন।
মূলত এ মৌসুমে অন্যতম শীর্ষ রফতানিকারক দেশগুলোতে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে, যা মোট উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। এর মধ্যে ফ্রান্সে এ মৌসুমে ৩ কোটি ৭৩ লাখ টন গম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে আগের মৌসুমে উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৪ লাখ টন। এছাড়া আর্জেন্টিনায় এবার ২ কোটি ৩ লাখ টন গম উৎপাদনের পূর্বাভাস মিলেছে, যেখানে আগের মৌসুমে উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৭২ লাখ টন।
একইভাবে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অন্যান্য দেশেও। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন বাড়বে ইইউতে, ১ কোটি ২৪ লাখ টন। সব মিলিয়ে এ মৌসুমে ইইউর খাদ্যশস্যের উৎপাদন ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৬৮ লাখ টন। তবে অন্যতম শীর্ষ উৎপাদক দেশ রাশিয়ায় এবার গম উৎপাদন বেশ কমতে পারে।
এ মৌসুমে দেশটির উৎপাদন ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৬৯ লাখ টন, যেখানে আগের মৌসুমে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৫৪ লাখ টন। অন্যদিকে এ মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড পরিমাণ ভুট্টা উৎপাদনের পূর্বাভাস পাওয়া গেছে। এ কারণে বিশ্বব্যাপী এবার খাদ্যশস্যের মোট উৎপাদনেও বড় উল্লম্ফনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আইজিসি বলছে, এ মৌসুমে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়ে ১১৯ কোটি ৩০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে, যেখানে আগের মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল ১১৩ কোটি ৯০ লাখ টন। আর যুক্তরাষ্ট্রে এ সময়ে ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে ৩৮ কোটি ৪০ লাখ টন, যেখানে আগের মৌসুমে দেশটির উৎপাদন ছিল ৩৬ কোটি ৩ লাখ টন। একইভাবে খাদ্যশস্যের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে ইউক্রেনেও।
তবে এ মৌসুমে ভুট্টার চাহিদায়ও ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা দিতে পারে বলে মনে করছে আইজিসি। সংস্থাটি বলছে, সরবরাহের তুলনায় এবার খাদ্যশস্যের চাহিদা বেশ এগিয়ে থাকবে। মূলত চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক চাহিদা থাকায় মৌসুম শেষে ভুট্টার মজুদে তেমন কোনও পরিবর্তন আসবে না।
এছাড়া ২০২১-২২ মৌসুমে সয়াবিন উৎপাদন ধরা হয়েছে ৩৮ কোটি ৩০ লাখ টন, যেখানে আগের মৌসুমে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৩৬ কোটি ১০ লাখ টন। এবার চাল উৎপাদন ধরা হয়েছে ৫১ কোটি টন, যেখানে আগের মৌসুমে উৎপাদন ছিল ৫০ কোটি ৪০ লাখ টন।
সান নিউজ/এসএ