আন্তর্জাতিক

মার্কিনীরা আমাদেরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে শিখিয়েছে : খামেনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনী ফার্সি নববর্ষ ১৪০০ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে ধরে নিয়েই দেশের দায়িত্বশীলদের কাজ করতে হবে। দেশের অর্থনীতিকে কোনও অবস্থায় সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ওপর নির্ভরশীল করে ফেলা যাবে না।

ভাষণে ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, যে দেশটি পরমাণু বোমা হামলা চালিয়ে একটি দেশের দুই লাখ ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করতে পারে সে দেশের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ অপ্রত্যাশিত নয়। পার্সটুডে

এই নিষেধাজ্ঞা আমাদের অনেক সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে এবং যুবসমাজ নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন এবং অনেক পণ্য দেশেই তৈরি করে ইরানকে পরনির্ভরশীলতা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। এটি আমাদের জন্য ছিল একটি মূল্যবান শিক্ষা। নিষেধাজ্ঞার মোকাবিলায় আমাদের দু’টি করণীয় রয়েছে।

প্রথমত, আমরা নিষেধাজ্ঞা আরোপকারীর কাছে গিয়ে অনুরোধ করতে পারি যে, আপনারা নিষেধাজ্ঞা তুলে নিন। তখন সে আমাদের ওপর সাম্রাজ্যবাদী দাবি-দাওয়া চাপিয়ে দেবে। এই পথটি অপমানজনক ও লজ্জাজনক।

দ্বিতীয় পথ হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে সব অর্থনৈতিক প্রয়োজন দেশের ভেতরেই মেটানোর চেষ্টা করা। ইরানি জনগণ দ্বিতীয় পথ বেছে নিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে, করোনা ভাইরাসের কথা উল্লেখ করা যায়। এই ভাইরাস ইরানে ছড়িয়ে পড়ার শুরুতে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত মাস্ক পর্যন্ত ছিল না। অথচ এখন আমরা নিজেরা করোনা ভাইরাস মোকাবিলার সব পণ্য দেশেই তৈরি করছি।

করোনা ভাইরাসের টিকা দেশেই তৈরি হয়েছে এবং জনগণ সে টিকা নিচ্ছে। কাজেই দেখা যাচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় আমাদেরকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে এবং অবমাননাকর পথ বেছে নেওয়া যাবে না।

পরমাণু সমঝোতা সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, আমেরিকার সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতি ব্যর্থ হয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সে চেয়েছিল ইরান অবমাননাকরভাবে তার কাছে নতিস্বীকার করবে।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইরান নতিস্বীকার করেনি বরং সেই ব্যক্তি চরম অপমানিত অবস্থায় বিদায় নিয়েছে। বিদায় নেওয়ার আগে সে আমেরিকারও বদনাম করেছে। অন্যদিকে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান গৌরবের সঙ্গে টিকে রয়েছে।

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনী বলেন, বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্টও যদি তার পূর্বসুরির পথ অনুসরণ করে তবে সেও একদিন হারিয়ে যাবে কিন্তু ইরান গর্বভরে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে।

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইরানের চূড়ান্ত নীতি হচ্ছে, পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী পশ্চিমা দেশগুলোকে নিজেদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে। নিষেধাজ্ঞা কার্যকরভাবে প্রত্যাহার করতে হবে। আর তারা তা করলেই ইরান এই সমঝোতায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করবে।

তিনি আমেরিকার মধ্যপ্রাচ্য নীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের মতো একটি কসাই সরকারকে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া আমেরিকার চরম ভুল সিদ্ধান্ত। সেইসঙ্গে সিরিয়ায় মার্কিন সেনা উপস্থিতিকেও তিনি ওয়াশিংটনের ভুল সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, কিছু আরব দেশ সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে গোটা মুসলিম উম্মাহর অবস্থানে কোনও পরিবর্তন হবে না। মুসলিম উম্মাহ ইহুদিবাদী ইসরাইলের হাতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড জবরদখলের দুঃসহ স্মৃতি কখনোই ভুলে যাবে না।

ইয়েমেন সংকটের জন্যও ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আমেরিকাকে দায়ী করে বলেন, মার্কিন সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও সবুজ সংকেত নিয়ে সউদী আরব এই দারিদ্রপীড়িত দেশটির ওপর আগ্রাসন শুরু করেছে। তিনি বলেন, এখনও সময় আছে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণা করার আগে ইয়েমেনে আগ্রাসন বন্ধ করুন।

সর্বোচ্চ নেতা তার ভাষণে নতুন ফার্সি বছরের নাম দেন উৎপাদন, পৃষ্ঠপোষকতা ও বাধা অপসারণের বছর। বিগত ফার্সি বছরের নাম ছিল উৎপাদন বৃদ্ধির বছর। নামের প্রতি সম্মান রেখে ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে বহু পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আয়াতুল্লাহ খামেনী এ বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিদেশি পণ্য আমদানি বন্ধ করা বা কমিয়ে দেওয়া এবং মধ্যসত্ত্বভোগী শ্রেণির প্রভাব কমানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মধ্যসত্ত্বভোগীরা পণ্য উৎপাদনকারী ও ভোক্তা উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। সর্বোচ্চ নেতা বিভিন্ন খাতে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরারও আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, শত্রুর কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ সত্ত্বেও ইরানের অর্থনীতি বিশ্বে ১৮তম অবস্থানে রয়েছে। এটি ছোটখাট কোনও ব্যাপার নয়। বিশ্বের দুইশ’র বেশি দেশের মধ্যে ১৮তম অবস্থানে থাকা অনেক বড় ব্যাপার। ইরানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথ থেকে কিছু প্রতিবন্ধকতা তুলে নেওয়া সম্ভব হলে এদেশ ১২তম অবস্থানে যেতে পারবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান। সূত্র : পার্সটুডে

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমেছে পেঁয়াজ, সবজি...

নলছিটিতে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু

ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির নলছিটিতে শুরু হয়েছে ভূট্টো স্মৃত...

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে মামলা, নারী আটক

জেলা প্রতিনিধি : সাভারের আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে বৈষম্যবিরোধ...

বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন পূজা 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চিত্রনায়িকা ও মডেল পূজা চেরি ডজনখানেক ছব...

বৈষম‌বিরোধী আন্দোলনে বেঁচে ফেরার আশা করেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোল&zwnj...

সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছ...

ফের বাড়ল সোনার দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বাজারে ফের সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা...

ফের হারলো সাকিবের দল

স্পোর্টস ডেস্ক : আবুধাবির টি-টেন টুর্নামেন্টে ফের হারের মুখ...

নোয়াখালীতে দুই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীতে পৃথক স্থান থেকে দুই গৃহবধূর...

ঢাকাবাসীকে নিরাপদ রাখতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকাবাসীকে যেকোনো উপায়ে নিরাপদ রাখতে হবে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা