আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গে চলমান বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারে মাঝে মাঝে যোগ দিচ্ছেন। তার অংশগ্রহণ ভোটারদের বেশি আগ্রহ করে তুলছে বলে অনেকে মনে করছেন।
পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার আসনে স্থানীয় তিলাবেদিয়া ময়দানে রোববারও (২১ মার্চ) এসে মোদি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ও দিদি…আরে দিদি…’, এমন করে তির্যক সুরে সম্বোধন করলেন। পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতির সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই রসিকতার সুরে ‘ও দিদি, আরে দিদি’, বলাটা মান্যতা পায় কিনা সেটা নিয়ে বিতর্ক চলছে।
মোদি তার নিজস্ব ভঙ্গিতে এভাবেই রাজ্যের নারী মুখ্যমন্ত্রীকে সমালোচনা করে চলেছেন বেশ কয়েকদিন ধরে। রাজ্যে প্রচারে এসে মোদী সবকটি সভা থেকেই এই একই ভঙ্গিতে ‘ও দিদি, আরে দিদি’, বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে চলেছেন। রোববারও তার ব্যতিক্রম হলো না।
রোববার বাঁকুড়ার সভা থেকে নরেন্দ্র মোদী ১০ বছরের তৃণমূল সরকারের সব কাজ নিয়ে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করলেন। ও দিদি, আরে দিদি বলরে মাঝে মাঝেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে ওঠেন। পাশাপাশি বললেন, ‘১০ বছর আপনি রাজ্যের মানুষের সঙ্গে যা করেছেন সেটা আগে জানলে কেউ আপনাকে রাজ্যের ক্ষমতায় বসাতো না। দিদি, আপনি আমার মাথায় লাথি মারুন, কিন্তু বাংলার মানুষের স্বপ্নে লাথি মারবেন না।’
মোদি এদিন বাঁকুড়া আসনের উন্নয়ন নিয়েও অনেক প্রতিশ্রুতি দেন। এই জেলায় জলের সমস্যা সমাধান করার কথা, কর্মসংস্থানের কথা, বাঁকুড়া জেলার রেশম শিল্পীদের উন্নয়নের ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। বাঁকুড়ার নির্বাচনী প্রচারে মোদী তৃণমূলের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন । তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের এতো পয়সা কোথা থেকে এলো? তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন করলে দিদি রেগে যাচ্ছেন।’
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে রোববারের রাজ্য সফর নিয়ে নরেন্দ্র মোদী এ পর্যন্ত মোট চতুর্থবারের জন্য রাজ্যে প্রচারে আসেন। রোববার বাঁকুড়ার হেলিপ্যাডে নেমে তিলাবেদিয়া ময়দানে সড়ক পথে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । এই সভায় প্রধানমন্ত্রীকে দেখার জন্য বহু সময় ধরে মানুষ অপেক্ষা করছিলেন। বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে এই তিলাবেদিয়া ময়দান। মঞ্চে বলতে উঠে প্রথমেই বাংলায় মোদি বলেন, ‘নমস্কার। আপনারা কেমন আছেন? আজ আমি গাড়ি করে এলাম। দেখলাম কত মানুষ। কতো মা, বোন। আপনাদের প্রণাম করছি।’
এর পরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনের সময় আপনাদের আশীর্বাদ নিতে এসে দিদি কি বলেছিলেন? এখানকার মানুষের জন্য দিদি কিছু করেননি। ভোটের দিন তাই চুপচাপ পদ্মে চাপ দিন। ২ মে দিদি যাচ্ছে। আসল পরিবর্তন আসছে। বাংলায় এমন পরিবর্তনের সরকার আসবে যা বাংলার মানুষের সেবা করবে। আসল পরিবর্তন বিজেপিই রাজ্যে আনবে। ভ্রষ্টাচার চলবে না চলবে না। দিদির ভ্রষ্টাচারের খেলা চলবে না চলবে না । দিদি সিন্ডিকেটের খেলা, কাটমনির খেলা চলবে না চলবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিজেপি এলে মায়ের পূজা হবে। মানুষের সম্মান দেওয়া হবে। দিদি ১০ বছরে আপনি আপনার রূপ দেখিয়ে দিয়েছেন। বাংলার মানুষ বুঝেছে মা,মাটি,মানুষের সরকার আসলে কী? এসব জানলে আপনাকে কেউ বাংলায় ক্ষমতায় অনতো না। দিদি, বাংলার মানুষের স্বপ্নে লাথি মারতে দেব না। দিদি, আপনার দুর্নীতির খেলা আর চলবে না । খেলা শেষ হবে, বিকাশ আরম্ভ হবে । ও দিদি, আরে দিদি, দরকারে আমার মাথায় লাথি মারুন, বাংলার উন্নয়নকে আটকাতে দেব না ।’
সান নিউজ/এসএস