ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
এক দুই করে এক লাখ ছাড়ালো করোনা নামক ভাইরাসে আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা। মৃত্যুর এই মিছিলে যুক্ত হলো এক লাখের বেশি মানুষ। কবে এই ভাইরাসের লাগাম পৃথিবী টেনে ধরবে তা জানা নেই কারও।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে চীন জানালো, দেশটির হুবেই প্রদেশের উহানের একটি পাইকারি সি ফুড মার্কেট এলাকায় এক ধরনের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। একে কর্তৃপক্ষ এক ধরনের করোনাভাইরাস হিসেবে শনাক্ত করলো। দেশটিতে হু হু করে বাড়তে থাকলো আক্রান্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল মৃত্যুও। দ্রুত কর্তৃপক্ষ রোগটি নিয়ন্ত্রণের জন্য উহান লকডাউন করলো। এরপর ধীরে ধীরে লকডাউন করা হলো দেশটির বহু শহর।
রোগটি চীনের পর ছড়িয়ে পড়লো ফিলিপিন্স ও হংকংয়ে। প্রকোপ বাড়তে থাকার মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম দিল কোভিড-১৯। একইসঙ্গে একে ঘোষণা করা হলো, বৈশ্বিক মহামারি হিসেবেও।
চীনের তান্ডবের পরে কোভিড-১৯ ইউরোপমুখী হলো। তখন মহামারির কেন্দ্রে পরিণত হলো ইউরোপ। ইতালিকে বানালো মৃত্যুপুরী। এরপর ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য ও বেলজিয়ামসহ মহাদেশটির প্রায় সবদেশেই প্রাণহানি বেড়েই চলেছে। এশিয়ার দেশ ইরানও বেশ বেকায়দায় রোগটি নিয়ে।
ইউরোপ যখন এই রোগ সামলাতে নাস্তানাবুদ চীন তখন অনেকটা সামলে নিয়েছে। সেখানে শুরুর দিকে যেভাবে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছিল তাতে বেশ শক্ত হাতে লাগাম টেনে ধরেছে দেশটি। পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহসহ অন্যান্য সাহায্য-সহযোগিতাও করা শুরু করেছে।
চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি চীন জানালো করোনাভাইরাসে দেশটিতে প্রাণ গেছে ৮ জনের। এরপর পার হয়েছে ৮১ দিন। এই ৮১ দিনে বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ প্রাণ কেড়েছে ১ লাখেরও বেশি মানুষের। শুরুর দিকে চীনে মৃত্যুর হার ছিল বেশি। কিন্তু তাকে খুব কম সময়ের মধ্যে ছাড়িয়ে গেছে ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইরান। সবচেয়ে বেশি প্রাণ গেছে ইতালিতে। দেশটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৮ হাজার ৮৪৯, যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ হাজার ৯১১, স্পেনে ১৫ হাজার ৯৭০, ফ্রান্সে ১২ হাজার ২১০, যুক্তরাজ্যে ৮ হাজার ৯৩১, ইরানে ৪ হাজার ২৩২, চীনে ৩ হাজার ৩৩৬, বেলজিয়ামে ৩ হাজার ১৯, জার্মানিতে ২ হাজার ৬০৭, নেদারল্যান্ডসে ২ হাজার ৫১১ জনের প্রাণ গেছে। এছাড়া বিশ্বের দু'শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে পাওয়া গেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী।
তবে এতো দুঃসংবাদের মাঝে রয়েছে সুসংবাদ। বিশ্বব্যাপী এই রোগের সাথে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছে ৩ লাখ ৬৯ হাজারেরও বেশি মানুষ। এক দিন হয়তো আসবে আবারো সুদিন। সেদিন হবে করোনা মুক্ত বিশ্ব।