ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়লেও চীনের পার্শ্ববর্তী দেশ ভিয়েতনামে ভাইরাসটি তেমন ছড়িয়ে পড়তে পারেনি।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দু'জন রোগীর শরীরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায় হন। যদিও মাত্র ১৩০০ কিলোমিটার দূরে চীনের উহানে তত দিনে আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ১৭০ জনের। তবে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভিয়েতনামে কোভিড ১৯-এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় মাত্র ১০।
দশ কোটির দেশ ভিয়েতনামে করোনা প্রতিরোধে দেশটির স্বাস্থ্য দফতর শুধুমাত্র সচেতনতা প্রচারই নয়, সরাসরি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগ শনাক্তের প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়।
অবশ্য ভিয়েতনামে প্রতিটি মানুষের জন্য আগে থেকেই মানসম্পন্ন পরিচর্যামূলক চিকিৎসার সুব্যবস্থা আছে, দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও খুব উন্নত। ফলে রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুও আটকানো সহজ হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, গত ৬ এপ্রিল পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ১টিও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। আক্রান্তের সংখ্যাও আড়াইশোর নীচে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের নির্দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জনবহুল জায়গা বন্ধের পাশাপাশি সন্দেহজনক সবাইকে খুঁজে খুঁজে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ জন্য ভিয়েতনামের স্বাস্থ্য বিভাগ কম খরচের কিটও বানিয়ে ফেলেছে। যা বিভিন্ন দেশ কিনতে শুরু করেছে।
সমীক্ষা বলছে, মার্চের শেষ পর্যন্ত প্রতি লাখ জনসংখ্যায় প্রায় ১৬ জনকে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে। অবশ্য আর্থিক ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় প্রয়োজন সংখ্যক পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই জোর দেওয়া হচ্ছে সংক্রমিতদের খুঁজে বার করার এবং স্থানীয় স্তরে নির্বাচিত নিয়ন্ত্রিত লকডাউনের ওপর।
এছাড়া কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থার মান এতোটাই ভালো যে, সেখানে থাকা এক ব্রিটিশ নাগরিকের ভাষায়, ‘থাকার জন্য এত স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হয় আমার বাড়িতেও নেই।’
করোনাভাইরাস মহামারিতে গোটা বিশ্বে এ পর্যন্ত ৭৬ হাজার ৫৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ৩৩৩ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ লাখ ৯৪ হাজার মানুষ।