আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের রাস্তায় রাস্তায় ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে টহল দেওয়া শুরু করেছে সেনাবাহিনী। অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদরত বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে বড় সমাবেশের দিকে ধাবিত হওয়ায় তাদের দমনে এই পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।
রোববার ( ১৪ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় রাত ১টা থেকে ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। খবর বিবিসির। দেশটির উত্তরাঞ্চলের রাজ্য কাচিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রোববার একটি বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে। অভ্যুত্থানের পর টানা নবম দিনের মতো চলা বিক্ষোভে এই গুলির ঘটনা ঘটেছে।
রোববার সারা দেশে র্যালি করে বিক্ষোভকারীরা। কাচিনের রাজধানী মিতকিনায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের সময় গুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে এটি লাইভ রাউন্ড গুলি নাকি রাবার বুলেট তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মত ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় অস্ত্রবাহী সাঁজোয়া যান চলতে দেখা গেছে। ভিক্ষু ও ইঞ্জিনিয়াররা সেখানে একটি র্যালি করেছে। এছাড়া রাজধানী নেপিদোতে মটরসাইকেল চালিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
মিয়ানমারের টেলিকম অপারেটররা জানায়, তাদেরকে রাত ১টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান নেটব্লক জানায়, এই আদেশ কার্যকর হওয়ার পর ইন্টারনেটের গতি ছিল স্বাভাবিক অবস্থার ১৪ শতাংশ।
নেপিদোর এক চিকিৎসক জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাতের বেলাতেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চিকিৎসক বলেন, ‘আমি এখনো উদ্বিগ্ন যে তারা রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত বাইরে না যেতে কারফিউ জারি করেছে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই পুলিশ আর সৈনিকরা আমাদের গ্রেফতার করছে।’
দেশটির সামরিক বাহিনী জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তা টম এ্যান্ড্রু। মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের এই বিশেষ প্রতিনিধি টুইটারে লিখেছেন, জেনারেলদের মধ্যে মরিয়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং তাদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
পশ্চিমা দূতাবাসগুলো সামরিক বাহিনীকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের যৌথ এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আহ্বান জানাই তারা যেন বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংযত আচরণ করেন, যারা তাদের বৈধ সরকারের উৎখাতের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।’
উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সরকারকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতাসীন দল এনএলডির নেতা অং সান সু চিসহ মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রীদের আটক করে রেখেছে সামরিক সরকার।
সান নিউজ/এসএ