আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মুক্তিপণ চেয়ে তুরস্কের ১৫ জন নাবিককে গিনি উপসাগরে অপহরণ করে জলদস্যুরা। জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তারা জানালেন দুর্বিসহ সেই সময়ের কথা।
রবিবার নাবিকরা ইস্তানবুল বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, দেশে ফিরে নাবিকরা বিমানবন্দরে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসগলুর এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। দুইদিন আগে তাদেরকে মুক্তি দেয়া হয়।
অপহরণের শিকার নাবিকরা ডিমাইরোরেন নিউজ এজেন্সির কাছে তিন সপ্তাহের দুঃসহ অপহরণ ঘটনার বর্ণনা দেন। বনের মধ্যে কঠিন সময় কাটাতে হয়েছে জানিয়ে জাহাজ এমভি মোজার্তের ক্যাপ্টেন মুস্তফা কায়া বলেন, ‘আমাদের চারপাশে অস্ত্রধারীরা ছিল। শারীরিকভাবে আঘাত করেনি; কিন্তু মুক্তিপণ আপস-রফার সময় মানুষিক চাপ প্রয়োগ করে। কোম্পানি তাদের কথা না শুনলে আমাদের হত্যার হুমকি দেয় তারা।’
গত ২৩ জানুয়ারি নাইজেরিয়ার লাগোস থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী কেপ টাউনে যাচ্ছিল এমভি মোজার্ত নামের তুর্কি জাহাজ। পথে নাইজেরিয়ার জলদস্যুরা জাহাজে হামলা চালায়। জাহাজের ১৯ জনের মধ্যে ১৫ জনকে অপহরণ করা হয়।
নাইজেরিয়া এবং গিনি উপকূলে জলদস্যুদের হামলা অনেকটা সাধারণ ব্যাপার। এসব জলদস্যু জাহাজে হামলা চালিয়ে নাবিকদেরকে অপহরণ করে এবং মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেয়।
জাহাজের ক্যাপ্টেন কায়া সংবাদ সংস্থার কাছে আরও জানান, অপহরণের সময় ক্রু সদস্যরা নিরাপদ কক্ষে তাদেরকে তালাবদ্ধ করে রাখেন। কিন্তু জলদস্যুরা পাঁচঘণ্টা চেষ্টার পরে তালা ভেঙ্গে কক্ষে প্রবেশ করে। তারা প্রতিনিয়ত ফাঁকা গুলি ছুড়ছিল। এক পর্যায়ে তাদের এক সহকর্মী মারা যায়। তার পেটে গুলি লেগেছিল বলে জানান তিনি।
শেষ পর্যায়ে জলদস্যুরা ক্রু সদস্যদের একটি নৌকায় করে নিরাপদ স্থানে ছেড়ে দিয়ে যায়। মুক্তিপণ দাবির দুই সপ্তাহ পর ক্রু সদস্যদের মুক্তি দিল। তবে জাহাজ কোম্পানি মুক্তিপণ দিয়েছে কিনা সেটা স্বীকার করেনি।
আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থার তথ্যানুসারে নাইজেরিয়া ও গিনি উপসাগর, টোগো, বেনিন, ক্যামেরুন জলদস্যুতার কারণে বিশ্বের সবথেকে ভয়াবহ সাগর হিসেবে কুখ্যাতি পেয়েছে।
সান নিউজ/আরআই