ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
কিছুদিন আগের বিশ্বের রূপরেখা যেন এক মুহূর্তে পরিবর্তন করে দিয়েছে করোনাভাইরাস। দেশে দেশে লম্বা হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। এই মহামারিতে ইকুয়েডরের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। দেশটির গুয়াইয়াকিল শহরে করোনাভাইরাসের কারণে মানুষজন শুধুমাত্র হাসপাতালে মারা যাচ্ছে তাই নয়; রাস্তায় রাস্তায় মৃত মানুষ পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে করোনায় সংক্রমণের সর্বোচ্চ তৃতীয় অবস্থানে ইকুয়েডর। এর আগে রয়েছে ব্রাজিল ও চিলি। তবে জনসংখ্যার অনুপাতে ইকুয়েডরে মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের চাইতে বেশি। গুয়াইয়াকিলের শেষকৃত্যের আয়োজকরাও এই পরিস্থিতির সামলে উঠতে পারছে না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি'র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গুয়াইয়াস প্রদেশে করোনাভাইরাসের কারণে পহেলা এপ্রিল পর্যন্ত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। পুরো ল্যাটিন অ্যামেরিকার সবগুলো দেশ মিলিয়েও এই পরিমাণ মানুষ মারা যায়নি করোনাভাইরাসে। ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৩৭ জনের মধ্যে।
প্রদেশটির রাজধানী গুয়াইয়াকিলেই মোট আক্রান্তের ৭০ শতাংশ রোগীর বসবাস। এটি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শহরগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে মাথাপিছু করোনাভাইরাস আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি। তার ওপর, ভাইরাস পরীক্ষার আগেই যারা মারা গেছেন তাদেরকে এই পরিসংখ্যানের বাইরে রাখা হয়েছে।
দেশটির রাজধানী থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ২৫ লাখ মানুষের বসতির কুইটো শহরে থাকেন জেসিকা কাস্তেদা। তিনি বলেন, আমার মামা সেগুন্দো ২৮ শে মার্চ মারা গিয়েছিলেন এবং কেউই আমাদের সাহায্য করতে আসেনি। হাসপাতালে বিছানা পাওয়া যায়নি এবং তিনি বাড়িতেই মারা যান। তার মরদেহ এখনও বিছানায় পড়ে আছে, আমরা ছুঁয়েও দেখতে পারিনি।
মার্চের শেষ সপ্তাহে, বাড়িতে তিনশ' জনের বেশি মানুষ বিভিন্ন কারণে মারা গিয়েছেন এবং তাদের মরদেহ পরে পুলিশ উদ্ধার করে। বার্তা সংস্থা ইএফই’র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে সঙ্কটের মাত্রা এমন যে প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো মৃতদেহ সরিয়ে নিতে এবং সমাহিত করতে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছেন।