আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিতর্কিত হিমালয় উপত্যকার মানুষ জাতিসংঘের গণভোটের সময় পাকিস্তানে যোগ দেয়ার জন্য ভোট দিলে কাশ্মিরকে স্বাধীন করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। জাতিসংঘে এই গণভোট দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে।
শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কাশ্মির সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের কোটলি নামক শহরে আয়োজিত এক জনসমাবেশে বক্তব্য দেয়ার সময় ইমরান খান এমন প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিনি এই অঞ্চলের নাগরিকদের স্বাধীনতার সংকল্প প্রতিষ্ঠার পূর্ণ অধিকার সবসময় দিতে রাজি ছিলেন।
ইমরান খান এ সময় বলেন, ‘আপনিই তো আপনার ভবিষ্যতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আল্লাহর ইচ্ছায় কাশ্মিরের মানুষ যদি পাকিস্তানের পক্ষে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়, আমি বলতে চাই এরপর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কাশ্মিরকে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার দেবে যে তারা পাকিস্তানের অংশ হয়ে থাকতে চান নাকি স্বাধীনতা চান।’
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান ও ভারতের যে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে তার দুটি ছিল কাশ্মির নিয়ে। উভয় দেশই পুরো কাশ্মির নিজেদের বলে দাবি করলেও পৃথক দুটি অংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে তাদের হাতে। দুই পক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিতর্কিত কাশ্মিরের দুই অঞ্চল লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) দ্বারা নির্ধারিত।
১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে ওই অঞ্চলের মানুষকে ভারত কিংবা পাকিস্তানে থাকার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে গণভোট আয়োজন বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। কিন্তু এতদিনেও সেই প্রস্তাবনা কার্যকর হয়নি। তবে ওই গণভোটে দুই দেশে না থেকে স্বাধীন কোন রাষ্ট্র গঠনের কোনো সুযোগ নেই।
পাকিস্তান শাসিত কাশ্মিরসহ উপত্যকা থেকে ইসলামাবাদ সেনা না প্রত্যাহার করা পর্যন্ত ভারত জাতিসংঘের এমন গণভোটের প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করে আসছে। উল্টো ২০১৯ সালে ভারত সরকার কাশ্মিরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন ও রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নিয়ে উপত্যকাকে দিখণ্ডিত করে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করে।
পাকিস্তান এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে, এমন সিদ্ধান্ত বাতিল করার জন্য প্রয়োজনে আলোচনায় বসারও আহ্বান জানায়। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। কাশ্মিরকে অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে নয়াদিল্লি। ফলে কাশ্মির নিয়ে ওই বছরই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতিরও তৈরি হয়েছিল।
শুক্রবারের বক্তৃতায় ইমরান খান আবারো ভারতের সাথে তার সরকার আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান। তবে এই আলোচনা হতে পারে তখনই যখন ভারত কাশ্মিরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা ফিরিয়ে দেবে। সূত্র : আলজাজিরা।
সান নিউজ/এসএ