আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জারি করা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পরপরই ‘একঝাঁক পূর্বপরিকল্পিত হামলা’ চালাতে পারে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। গত ছয় মাসে বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ সতর্কতা দিয়েছে জাতিসংঘ। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
আইএস ও আল-কায়েদা বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিরা তাদের ‘খবরের সঙ্গে দূরত্ব’ সমাপ্ত করতে সহিংসতার ঢেউ তুলতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, চলাচলে বিধিনিষেধের কারণে অনেক মানুষ অনলাইনে বেশি সময় ব্যয় করায় ভালোই ‘বন্দি শ্রোতা’ পেয়েছে আইএস। এই সময়ে শনাক্ত না হওয়া হুমকিগুলো হয়তো ঘনিভূত হয়েছে, যা সময়মতো প্রকাশ পেতে পারে।
গত অক্টোবরে আইএসের মুখপাত্র আবু হামজা আল-কোরেশি সংগঠনটির সমর্থকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় কম ব্যয় করে উচ্চ-প্রভাববিশিষ্ট হামলা, জেলভাঙা ও অন্য সক্রিয় কর্মকাণ্ডে বেশি শ্রম দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
দ্য গার্ডিয়ান বলছে, যদিও ইউরোপের মতো ‘বিরোধমুক্ত’ অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলার হুমকি বরবরই কম, তবে জাতিসংঘের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জঙ্গিরা ইতোমধ্যে যেসব এলাকায় সুপ্রতিষ্ঠিত, সেখানকার স্থানীয় সরকারগুলোকে ফাঁকি দেয়ার বড় সুযোগ এনে দিয়েছে করোনাভাইরাস মহামারি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মহামারি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে আটকানোর চেয়ে সংঘাতময় অঞ্চলে সরকারগুলোর হাত বেশি দুর্বল করেছে এবং অর্থনীতি, সরকারি সংস্থান ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বরাদ্দের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব হুমকি আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
জাতিসংঘ বলছে, আইএস মহামারিকে ‘অহংকার ও অবিশ্বাসের জন্য ঐশ্বরিক শাস্তি’ উল্লেখ করে জোর প্রচারণা চালাচ্ছে এবং সন্ত্রাসবিরোধী প্রতিরোধ দুর্বল হয়ে ওঠা ‘শত্রুদের’ ওপর আক্রমণ করতে অনুসারীদের নির্দেশ দিয়েছে।
অবশ্য করোনাভাইরাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারে আইএসের এই পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত খুব একটা সফলতা পায়নি।
প্রতিবেদনে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো বেশ কিছু বিপর্যয়ের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- আল-কায়েদা বিপুল সংখ্যক প্রধান নেতা হারিয়েছে, আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে চরমপন্থী কর্মকাণ্ডের লড়াই ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। এছাড়া ইরাক বা সিরিয়ার মতো দেশে বড় কোনো অঞ্চল খুব শিগগিরই আইএস দখলে নিতে পারারও সম্ভাবনা কম।
সান নিউজ/এসএম