আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্ব ব্যবস্থায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কাঁপছে পৃথিবী। বিশ্বের সবথেকে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন দেশটির ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষরা।
পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ার বাসিন্দা নিরঞ্জন হালদারের ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে একই সমস্যা। নিজের গৃহ বাদ দিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে তিনি বেছে নিয়েছেন ভিন্ন এক জায়গা।
ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে নৌকায় আবাস গেড়েছেন নিরঞ্জন হালদার। আগামী ১৪ দিন তাকে নৌকাতেই দিন কাটাতে হবে।
জানা গেছে, গ্রামে গ্রামে ঘুরে গান গেয়ে অর্থ উপার্জন করেন নিরঞ্জন হালদার। মার্চের শেষ দিকে মালদহের হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডীতে বোনের মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। অন্য এলাকা থেকে আসায় তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার দাবি তোলেন গ্রামবাসী। তা না করলে এ গ্রামে থাকতে দেয়া হবে না নিরঞ্জনকে। উপায় না দেখে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীর দারস্থ হন তিনি। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেন। কিন্তু আত্মীয়ের বাড়িতে বাড়তি ঘর না থাকায় নৌকায় থাকতে শুরু করেন নিরঞ্জন।
বুলবুলচণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতের ডুবাপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া টাঙন নদীর ঘাটে বাঁধা একটি নৌকাকে নিজের ঘর বানিয়েছেন নিরঞ্জন।
নিরঞ্জন জানান, ভাগ্নির বাড়িতে থাকার জায়গা নেই। আমার জ্বর, সর্দিও নেই। তবু একাকী একটি ঘরে থাকতে বলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাই নৌকায় বসবাস শুরু করেছি।
নিরঞ্জনের নাতি রঞ্জিত হালদার বলেন, ছোট্ট একটি ঘরে কোনোমতে থাকি আমরা। দাদাকে কীভাবে আলাদা রাখব! তাই এই বুদ্ধি।
এ বিষয়ে স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্বজিৎ সিংহ বলেন, বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এনেছি। হোম কোয়ারেন্টিনের জন্য বিভিন্ন স্কুল বেছে নেয়া হচ্ছে। কোনো একটি স্কুলকক্ষে নিরঞ্জনের ঠাঁই হবে বলে আশা করছি।
সান নিউজ/সালি